নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন আদালতের নির্দেশে অডিট আপত্তির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আরও ১ হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)।
মঙ্গলবার (১৯ মে) বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হকের হাতে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ এই পে-অর্ডারের চেক জমা দেন। গ্রামীণফোনের এক হাজার কোটি টাকা জমা উপলক্ষে অনলাইনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে বিটিআরসি। বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা ওই ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্ত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসিতে ১ হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে গ্রামীণফোন বিটিআরসির দাবির মোট দুই হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, ‘আগামী ৩১ মে’র মধ্যে বিটিআরসিতে গ্রামীণফোনের এই টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই তারা টাকা জমা দিয়েছে। এজন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ। করোনাভাইরাসের এই সঙ্কট মুহুর্তে এই অর্থ জমা দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের খুব উপকার হবে। গ্রমীণফোনের ন্যায্যতার যে পাওনা তারা তা পাবে। তার বিপরীতে তাদের কাছে আামাদের যে পাওনা তাও তারা পরিশোধ করবে।’
গ্রামীণফোনের পক্ষে বিটিআরসিকে এক সময় চাঁদাবাদ বলে অভিযোগ করা হয়েছিল, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা আইনের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছি। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে তারা টাকা জমা দিচ্ছে। চাঁদাবাজি না আইনগতভাবে টাকা নিচ্ছি তা তো প্রমাণিতই।’
একই প্রশ্নের উত্তরে গ্রামীণফোনের সিইও বলেন, ‘বারবার প্রশ্ন করে, শব্দটি ছুড়ে দিয়ে, ওই শব্দটি মুখ থেকে বের করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ডিফারেন্ট কোশ্চেন করে এই বক্তব্য নেওয়া হয়েছিল।’
অডিট আপত্তির বাকি অর্থ আদায়ে গ্রামীণফোনের সঙ্গে আলোচানায় বসা হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি চেয়্যারম্যান।
তিনি বলে, ‘আমরা উভয়পক্ষ বসবো। হিসাব করে দেখবো কম-বেশি হয় কি না। যদি উপযুক্ত প্রমাণ কেউ দেখাতে পারে সেটা যদি ন্যায় সঙ্গত হয় তবে সেটা মেনে নেবো। এটা অর্থ বিভাগ দেখছে। তবে রি-অডিট হওয়ার সুযোগ নেই।
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, ‘পে অর্ডারের চেক আমরা হস্তান্তর করেছি। নির্দিষ্ট সময়ের আগে দিতে পেরেছি এজন্য আমরা খুশি। আমরা বিটিআরসি থেকে সব রকমের সহযোগিতা পাচ্ছি। এসময় সবার একসঙ্গে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ। করোনা ভাইরাসের মহামারির সময়ে প্রতিষ্ঠান হিসাবে গ্রামীণফোন সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে পিপিই দিয়েছি। ‘ডাকছে আমার দেশ’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। কাস্টমারদের কাছ থেকে অনুরোধ ছিল কিছুটা সুবিধা দেওয়ার। আমরা করোনাকালীন গ্রাহকদের সেই সুবিধা দিয়েছি। করোনার সময় সাধারণ মানুষের পাশে আমরা এগিয়ে এসেছি। এতে আমরা প্রশংসিত, অন্যরাও এভাবে এগিয়ে আসবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’
তিনি বলেন, ‘ভালো কাজকে উৎসাহিত করতে হবে। ভালো কাজগুলোকে তুলে ধরতে হবে। এই মুহূর্তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভয়েস কল ও ইন্টারনেটে আমরা যে সুযোগ দিয়েছি সেটাতে সবার উৎসাহিত হওয়া উচিৎ। এর ফলে প্রতিযোগিতা বিনষ্ট হবে না, আমাদের এটা আরও বেশি করে করা উচিৎ।’