নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) ওয়ান স্টপ সার্ভিস শুরুর প্রক্রিয়া শেষ হয়নি এখনও। এ-সংক্রান্ত আইনের খসড়া প্রস্তুত রয়েছে। সংসদে পাস হলেই তা কার্যকর করা যাবে। তবে বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য সরকারি সেবায় নানা রকম জটিলতা কমাতে হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থাকে এ-সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। গতকাল এ বিষয়ে সাতটি বিভিন্ন সরকারি দফতর তাদের কর্মপরিকল্পনা দিয়েছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা জানান বক্তারা। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বাস্তবায়ন সেলের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারে এসডিজি বাস্তবায়ন সেলের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিডা এরই মধ্যে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে। প্রতি তিন মাস পরপর এমন একটি সেমিনারে স্টেকহোল্ডাররা তাদের কাজের অগ্রগতি জানাবেন। তিনি বলেন, আজ সাতটি সরকারি দফতর থেকে অগ্রগতি প্রতিবেদন এসেছে। বাকি যারা প্রতিবেদন দেয়নি তাদের এ বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে হবে। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, ব্যবসা পরিবেশ-সংক্রান্ত ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থা ১৭৬তম। এ অবস্থান আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা ৯৯ বা তার নিচে আনতে চাই। এজন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা বিশ্বের ২৩টি দেশের ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করে তাদের সমস্যা ও ব্যর্থতাগুলো জানার চেষ্টা করেছি। সে অভিজ্ঞতা নিয়েই আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।
বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্য দিয়েই কীভাবে বিনিয়োগে সহজ পরিবেশ নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি। এছাড়া আইনি সংস্কারেরও চেষ্টা চলছে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ ভিসা ব্যবস্থা করার জন্য আমি সরকারের কাছে সুপারিশ করেছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকও আন্তরিকভাবে কাজ করছে। অস্ত্র, পারমাণবিক উপকরণ, নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি এবং বন ও পরিবেশ সংশিষ্ট বিষয় ছাড়া যে কোনো বিষয়ে বাংলাদেশ উš§ুক্ত। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইএফসি) সঙ্গেও বাংলাদেশ তিনটি সমঝোতা সই করেছে, যার আওতায় ব্যবসার পরিবেশ সহজীকরণের বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
সেমিনারে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসিএফ), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তিনটি বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং পরিবেশ অধিদফতর তাদের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করে।
এতে এনবিআরের প্রতিনিধি বলেন, ভ্যাট অনলাইন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে আগামী জুলায়ে। ফলে নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে। রাজউকের প্রতিনিধি জানান, ভবন নির্মাণের অনুমোদনের জন্য রাজউকে সাধারণত বিভিন্ন কার্যক্রম মিলে ১৫০ দিন লাগতো। এখন ৬০ দিনের মধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সময় অন্যান্য দফতরও অগ্রগতির জন্য তাদের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। জয়েন্ট স্টকের প্রতিনিধি কোম্পানিজ অ্যাক্টের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া উপস্থাপন করেন।