বিদায়ী বছরে দেশের পুঁজিবাজারে সার্বিক অবস্থা মোটামুটি ভালো ছিল। এ বছর বেশি বিনিয়োগকারী বাজারের সঙ্গে জড়িত হয়েছেন এবং বিদেশিরা বিনিয়োগকারীরাও এখান থেকে লভ্যাংশ নেওয়া শুরু করেছেন। ২০১৭ সালেই কিন্তু তারা লভ্যাংশ বেশি নিয়েছেন। ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারের সূচক পাঁচ হাজার ৫০০-৬০০ পয়েন্টের মতো ছিল। তা এ বছর ছয় হাজার ৩০০ পয়েন্টের মতো ছুঁয়েছিল। পরে কিছুটা দর সংশোধন হয়ে এখন সূচক ছয় হাজার ২৫০ পয়েন্টের মতো হয়েছে। এমন মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ। গতকাল আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের পুঁজিবাজার এখনও ছোট বাজারের ক্যাটেগরিতেই থেকে গেছে। যদিও আমাদের অর্থনীতির আকার বেশ বড় হয়েছে ২৫০ বিলিয়ন ডলারের মতো কিন্তু সে তুলনায় দেশের পুঁজিবাজার পিছিয়ে আছে। আর পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করা যায়নি এবং বাজারে বন্ড মার্কেট নেই। শুধু ইকুইটি বেজ পুঁজিবাজার এটি। গত অর্থবিলে আমরা আশা করেছিলাম, করপোরেট ইনকাম ট্যাক্সের ওপর অর্থ একটু হ্রাস করা হবে। আর এটি ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে আনার একটি উদ্দীপক। উদ্দীপক না থাকলে হাজার কথা বলেও ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে আনা সম্ভব নয়। বাজারে আরও কিছু ভালো শেয়ারের জোগান দিতে হবে। সম্প্রতি যে ৯টি শেয়ারবাজারে এসেছে, সেগুলোকে আমি খুব ভালো শেয়ার বলব না। যদিও কয়েকটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে এসেছে। আর এসেই এক-দুটির দর কারসাজি হয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীরা এখন আগে থেকে অনেক সচেতন হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল বলেন, আমাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) শতাংশের তুলনায় অনেক কম। দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারদর বাড়া-কমার কারণে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ওঠানামা করে। আমাদের মোট যে কোম্পানিগুলো আছে, তার এক শতাংশও তালিকাভুক্ত নেই পুঁজিবাজারে। আর পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়াতে হলে বেশি কোম্পানি আনতে হবে বাজারে। গত কয়েক বছর ধরে চাহিদাটি এত কম ছিল যে, সরবরাহের দিকটিতে অনেক বেশি সুযোগ ছিল না। এখন আবার সময় এসেছে, যেহেতু মোটামুটি চাহিদাটি একটি জায়গায় এসেছে আরও কোম্পানি নিয়ে আসার।