Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 2:05 am

বিদেশফেরত একজনসহ পরিবারের তিন সদস্য আক্রান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে আরও তিনজনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যারা এর আগে আক্রান্ত এক প্রবাসীর পরিবারের সদস্য। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সোমবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, নতুন যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুই শিশুর বয়স ১০ বছরের নিচে; অন্যজন নারী। দুই শিশুর জ্বর-সর্দি ছিল, তাদের সবার সংক্রমণই ‘মৃদু’।

এর আগে দ্বিতীয় দফায় ইতালি ও জার্মানিফেরত যে দুজনের মধ্যে ভাইরাস ধরা পড়েছিল, তাদেরই একজনের মাধ্যমে তার পরিবারের ওই তিন সদস্য আক্রান্ত হলেন।

ওই তিনজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘তাদের লক্ষণ-উপসর্গ মৃদু। তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো; কিন্তু  ভাইরাসটি যেন আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য তাদের আমরা আইসোলেশন ইউনিটে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অন্যান্য দেশের মতো তাদেরও বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করা যেত; কিন্তু আমরা তা করছি না।’

এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট আটজনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ল, যাদের মধ্যে প্রথম দফায় আক্রান্ত তিনজন এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি আছেন পাঁচজন।

আক্রান্তরা যে উপজেলার বাসিন্দা, সেখান থেকে যেন রোগটি ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য সেখানে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইইডিসিআর পরিচালক।

তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন, তাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে হলে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন বা জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিতে হবে। যারা বিদেশ থেকে এসে পরিবারের সঙ্গে থাকছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদেরই সেপারেশনটা নিশ্চিত করতে হবে। কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে তাদের মেলামেশা করতে হবে।’

যদি কেউ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিষয়টি না মেনে অবাধ ঘোরাফেরা করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে সংক্রামক ব্যাধি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে বলে সতর্ক করেন অধ্যাপক ফ্লোরা। তিনি বলেন, ‘সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অপরিচিত মানুষের সমাবেশ হয়Ñএমন আয়োজন বন্ধ রাখুন।’

করোনাভাইরাস অতি দ্রুত ছড়ালেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর সংক্রমণে খুব মৃদু উপসর্গ দেখা দেয় জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, তারা মৃদু রোগে ভুগছেন। তাদের মৃদু কাশি, গলাব্যথা, মৃদু জ্বর হয়। আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি সতর্কতায়। সবার অংশগ্রহণ ছাড়া কিন্তু রোগটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’

বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গত ৮ মার্চ প্রথম বাংলাদেশে তিনজন এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানায় আইইডিসিআর।

ওই তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালি থেকে এসেছিলেন। ইতালিফেরত একজনের পরিবারের সদস্য ছিলেন আক্রান্ত তৃতীয়জন। ওই সময় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি আরও চারজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল।