বিদেশিদের সঙ্গে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের এমওইউ খতিয়ে দেখছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) মার্কিন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এসআইজির সঙ্গে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) বিষয়ে বিশদ জানতে চেয়েছে। গত রোববার চিঠি পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ডিএসই। সাত দিনের মধ্যে কমিটি বিএসইসির কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে কাজ করছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) এম সাইফুর রহমান মজুমদার।

ডিএসই মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) তালিকাভুক্ত এ নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এতে এপ্রিল মাসে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বাক্ষরিত এমওইউ প্রসঙ্গে বিভিন্ন তথ্য ও খুঁটিনাটি বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, মার্কিন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এসআইজি এ বছরের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। এতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানটি সম্ভাব্য দুই বছরে বাংলাদেশে দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।

এমওইউতে সম্ভাব্য বিনিয়োগ তিনটির মধ্যে রয়েছে- সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের শেয়ার কেনা, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সকে চার কোটি ডলার ঋণ দেয়া (মূলত টেকসই অর্থায়ন পোর্টফোলিওকে শক্তিশালী করার জন্য) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বড় বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা। এসব প্রকল্পে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের স্ট্রাকচারাল ফাইন্যান্স টিম সভরেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার গ্রুপের লোকাল অংশীদার হিসেবে কাজ করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বাংলাদেশের ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার হামিদ বলেন, দুই অংশীদার তিনটি পদ্ধতিতে কাজ করছে এবং বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে ডকুমেন্টেশনের লিগ্যাল ভেটিং, বিভিন্ন টেকনিক্যাল শর্ত ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশে যেকোনো স্থানীয় ঋণদাতাকে বিদেশি তহবিল থেকে সহযোগিতা দেয়ার ক্ষেত্রে গড়ে দুই বছর বা তারও বেশি সময় লাগে। এমনকি ঢাকায় অফিস আছে- এমন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, যেমন ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন, ডিইজির মাধ্যমে যেসব অর্থায়ন করা হয়, তাদের ক্ষেত্রেও এ সময় প্রযোজ্য। ফলে সভরেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার থেকে অর্থায়নের জন্য সময় লাগাটাই স্বাভাবিক বলে জানান কায়সার হামিদ।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সে বিদেশি ইক্যুইটি বিনিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি একটি এমওইউ ছিল; চুক্তি নয়। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী এসআইজি যদি ৪ শতাংশ শেয়ার নিশ্চিত করে, তবে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের বোর্ডে তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।’

কায়সার হামিদ বলেন, এসআইজির অংশীজনদের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সুনাম রয়েছে। আর তা হলো ব্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয় সব প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যবস্থা করা। তিনি বলেন, দুই বিলিয়ন ডলারের যে বিনিয়োগের কথা বলা হচ্ছে, তা আরও বড় হতে পারে; যদি স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা তাদের আকৃষ্ট করতে পারে, সময়মতো রিপোর্ট দিতে পারে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিয়মকানুন সহজ করে।

এসআইজি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি নক্স নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিটে দুই দশকের বিনিয়োগ ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে ১১৫ বিলিয়ন ডলারের স্ট্রাকচারাল ফাইন্যান্সের ব্যবস্থা করেছিলেন বলে জানান কায়সার হামিদ। এর মধ্যে এসআইজির সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডাম হিচকক এবং ম্যানেজিং পার্টনার একই সঙ্গে ওবামা প্রশাসনের অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের চিফ অব স্টাফ ছিলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত; কেননা তাদের স্ট্রাকচারাল ফাইন্যান্স টিম এবং এসআইজি স্থানীয় কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০