নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের ওপর ২০ শতাংশ উৎসে কর আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে তা আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এনবিআর থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৭৬ উপধারা (১)-এর ক্ষমতাবলে অনিবাসীর অনুকূলে ঋণের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে প্রেরণকালে উৎসে কর কর্তন থেকে শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি দেয়া হলো। অব্যাহতির মেয়াদ ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে, আয়কর আইনের ধারা ১১৯-এর উপধারা (২)-এর বিধান পরিপালন করতে হবে। এছাড়া ঋণের সুদ অগ্রিম পরিশোধের ক্ষেত্রে এই কর অব্যাহতি প্রযোজ্য হবে না।
এর আগে চলতি বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পেমেন্টের ওপর ২০ শতাংশ ‘উইথহোল্ডিং ট্যাক্স’ আরোপ করার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য এনবিআরকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনবিআরকে বলেছে, এই কর বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়ার খরচ উল্লেখযোগ্যহারে বাড়িয়ে দেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এর ফলে বিদেশি ঋণ নেয়ার খরচ কার্যত এক-চতুর্থাংশ বেড়ে যাবে।
গত ৩১ আগস্ট পাঠানো একটি চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এনবিআর এর আগে ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর জারি করা একটি সার্কুলারের মাধ্যমে বিদেশি ঋণের সুদের ওপর কর মওকুফ করেছিল। তবে চলতি বছরের ২৩ মে একটি সার্কুলার জারির মাধ্যমে এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়।
ফলে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট ও বায়ার্স ক্রেডিট দ্বারা পাওয়া বিদেশি ঋণের বিপরীতে সুদ পেমেন্টের ক্ষেত্রে এখন থেকে ২০ শতাংশ উৎসে কর কাটা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, শেষ পর্যন্ত ঋণগ্রহীতারাই এই অতিরিক্ত খরচ বহন করবে, বিদেশি ঋণদাতারা নয়। ফলে গ্রস-আপ ভিত্তিতে হিসাব করা হলে করের হার কার্যত ২৫ শতাংশ বাড়বে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও বলেছে, বিদেশি ঋণের সুদের হার এরই মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং নতুন আরোপিত কর এই ঋণগুলোকে আরও ব্যয়বহুল করে তুলবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণের সুদহার এবং বিনিময়হারের ঝুঁকির কারণে অফশোর ব্যাংকিং ইউনি, করপোরেট ও আমদানিকারকরা বিদেশি ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত হবে, যা টাকার তারল্য ও বিনিময়হারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।