বস্ত্র খাত

বিদেশি ঋণে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির সিদ্ধান্ত দেবে বিডা

শেখ আবু তালেব: মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিদেশি ঋণ নিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে আমদানি দায় পরিশোধে ৩৬০ দিনের সময় দেয়া হয়। আমদানি দায় পরিশোধ বা পুনঃঅর্থায়ন অনেক ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট সময়ে করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষত কভিড মহামারিতে বিলম্ব হচ্ছে। এক্ষেত্রে সময় বৃদ্ধির জন্য এখন থেকে বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অনুমতি নিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা জানান, আগে এ অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংকই দিতে পারত। অনুমোদন ও যাচাই বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েয়ে বলে জানিয়েছে বিডা। তবে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে খাত-সংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়া হলে নীতিমালা মেনে চলতে সুবিধা হয় বলে উদ্যোক্তাদের দাবি। দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই পূর্বের নীতিমাল অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু মাঝপথে নতুন নীতিমালা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জটিলতায় পড়তে হয়। অনেক ক্ষেত্রে সময়মতো সিদ্ধান্তগুলো জানাও যায় না।

জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিষয়ে। সিদ্ধান্তের বিষয়টি ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিলম্ব পরিশোধ ব্যবস্থায় আমদানি পুনঃঅর্থায়ন বা সময় বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

বিদেশি সাপ্লায়ার্স বা ঋণদাতাদের বিপরীতে আমদানি পণ্যের দায় বিলম্বে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে সময় বৃদ্ধি কিংবা পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে বিডার অনুমোদন নিতে হবে। এক বছরের বেশি সময়ের বেলায় এ অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। বিডা এবং বস্ত্র অধিদপ্তরে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের জন্য এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রে আমদানি দায় পরিশোধের সময় শেষ হওয়ার এক মাস আগে বিডাতে আবেদন করতে হবে। সার্কুলারে বলা হয়েছে, বিদেশি সরবরাহকারী কিংবা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান এক বছরের অতিরিক্ত সময় কিংবা ওই অতিরিক্ত সময়ের জন্য পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা স্থানীয় আমদানিকারককে প্রদান করবে।

বিডার বেসরকারি খাতের বৈদেশিক ঋণ বা সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক ঋণ বা সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট বাছাই কমিটিতে বিডার প্রতিনিধিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। কিন্তু এক বছরের মধ্যে আমদানি দায় পরিশোধ করলে নতুন করে কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না।

এদিকে সময় বৃদ্ধিতে বিডার অনুমোদন নেয়ার বাধ্যবাধকতার বিষয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তরা। তারা বলছেন, এ এ সিদ্ধান্ত ইজ অব ডুয়িং বিজনেস বা ব্যবসা প্রক্রিয়া সহজীকরণের বিরুদ্ধে। বিদেশি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান যদি আমাদের এক বছরের বেশি সময় দিতে চায়, তাহলে আমাদের দেশীয় কর্তৃপক্ষের সমস্যা কোথায়। কেন তাদের অনুমোদন নিতে হবে। এতে সময় বেশি লাগবে। জটিলতা বাড়বে। অফিসে গিয়ে ফাইল নিয়ে ছোটাছুটি করতে হবে। নিত্যনতুন কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ হাতেম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান যদি আমাদের তিন বছরের সময় দিতে চায়, তাহলে আমাদের বিডা বা অন্য কার কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে কেন? আমরা তো দায় পরিশোধ করছি। এসব প্রক্রিয়া কাদের সঙ্গে আলোচনা করে? প্রশাসনিক কিছু সিদ্ধান্ত ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের বিপক্ষে। এসব জটিলতা না করাই ভালো। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০