বিদেশি ঋণ ব্যয় করতে না পারার কারণ জানতে চায় আইএমএফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈদেশিক ঋণের অর্থ কাক্সিক্ষত মাত্রায় খরচ করতে না পারার কারণ জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এক্ষেত্রে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বৈদেশিক উৎস থেকে কত টাকা ধরা হয়েছিল এবং সেই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কত টাকা ছেঁটে সংশোধিত এডিপি করা হয়েছেÑএসব বিষয় প্রশ্ন তুলেছে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল। সেইসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ডেটা সিস্টেম বিষয়েও জানতে চেয়েছে তারা।

ইআরডির সঙ্গে বৈঠক করেন আইএমএফের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। গতকাল তারা ইআরডির সচিব শরিফা খানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় ইআরডির টেকনিক্যাল টিমের প্রধান অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সচিবের দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী অবস্থাসহ নানা বিষয় উঠে আসে আলোচনায়। বিশেষ করে ইআরডি ডেটাবেজ সংস্কারের কথা বলা হয়েছে আইএমএফের পক্ষ থেকে। বর্তমানে ইআরডি আঙ্কটাডের নির্দেশনা মেনে ডেটাবেজ পরিচালনা করছে বলে ইআরডির পক্ষ থেকে জানানো হয়। এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহার প্রসঙ্গে ইআরডির পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানানো হয়। এক্ষেত্রে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকা। সেখানে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান মিলে ধরা হয়েছিল ৯২ হাজার ২০ কোটি টাকা। কিন্তু এডিপি সংশোধনের সময় কাটছাঁট করা হয় ১৯ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক অংশে বাদ যায় ১৭ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক অর্থ খরচের লক্ষ্য ধরা হবে ৯৪ হাজার কোটি টাকা। এ সময় প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়িয়ে পাইপলাইনে জমে থাকা অর্থের ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল।

জানতে চাইলে ইআরডির সচিব শরিফা খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইএমএফ শুধু সৌজন্য বৈঠক করার জন্যই এসেছিল। বৈঠকে তেমন কিছু আলোচনা হয়নি। তাদের সব আলোচনা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের ডেটাবেজের বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। আমরা জানিয়েছি আঙ্কটাডের নির্দেশনা মেনে এটি পরিচালিত হচ্ছে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা বাজেট সহায়তার দ্বিতীয় কিস্তি কবে নাগাদ ছাড় করবে সেটি আমাদের সঙ্গে আলোচনার

বিষয় নয়।’

ইআরডির একাধিক সূত্র জানায়, ইআরডির সঙ্গে বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিদল বর্তমান সরকারের বৈদেশিক ঋণের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়। এক্ষেত্রে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং উচ্চ এবং স্বল্প সুদের ঋণের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেয় প্রতিনিধিদল। পাশাপাশি আগে দেয়া আইএমএফের কারিগরি সহায়তা ব্যবহারের বিষয়টিও উঠে আসে আলোচনায়। সেই সঙ্গে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের (স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা

থেকে উত্তরণ) বর্তমান অবস্থা এবং উত্তরণ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কেও জানতে চায় প্রতিনিধিদল। এসব বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে ইআরডির পক্ষ থেকে।

এদিকে একই দিন বিকেলে  পরিকল্পনা কমিশনের একটি প্রকল্প সংশিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিনিধিদল। এসপিএসআইএস প্রকল্পের সঙ্গে বৈঠকে তারা এখন পর্যন্ত আইএমএফের কর্মসূচির আওতায় কী ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে সেসব বিষয় জানতে চায়। সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার নানা বিষয়ে খোঁজখবর নেয় বলে জানা গেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০