বিদেশি গাছের আগ্রাসন রোধে ‘সবুজ আন্দোলনে’র পাঁচ প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: একসময় বাংলাদেশে পাঁচ হাজার প্রজাতির দেশীয় গাছ থাকলেও বর্তমানে তা কমে তিন হাজার ৮২৮ প্রজাতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ বিদেশি গাছের আমদানি ও অপরিকল্পিত সবুজায়ন। তাই বিদেশি গাছের আগ্রাসন রোধে ও দেশীয় প্রজাতির প্রজনন বৃদ্ধিতে পাঁচ প্রস্তাবনা দিয়েছে সবুজ আন্দোলন নামে একটি সংগঠন।

গতকাল শুক্রবার ‘বিদেশি প্রজাতির গাছের আগ্রাসনে দেশীয় প্রজাতির গাছের বিলুপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভা থেকে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার বলেন, সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে হুমকিতে পড়ছে। একদিকে উন্নত রাষ্ট্রগুলো মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ করছে, অন্যদিকে বাংলাদেশে উন্নয়নের নামে গাছপালাকে নির্বিচারে কর্তন করা হচ্ছে।

বিদেশ থেকে দ্রুত বর্ধনশীল বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ আমদানি করা হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এসব বৃক্ষ জ্বালানি সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখছে ঠিকই, কিন্তু ক্রমাগত মাটি ও পরিবেশের সর্বনাশ করে চলছে। বিদেশি প্রজাতির বিভিন্ন গাছের জন্য প্রচুর জায়গার দরকার হয়। এগুলো দেশি গাছের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে পুষ্টি ও পানি শোষণ করে। তাই এসব বৃক্ষের আশপাশে দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষ বাঁচতে পারে না। তাই বিদেশি প্রজাতির গাছের আগ্রাসন রোধ ও দেশীয় প্রজাতির গাছের প্রজনন বৃদ্ধিতে প্রয়োজন টেকসই পরিকল্পনা।

এজন্য পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরে সবুজ আন্দোলন। এগুলো হলোÑবিদেশি প্রজাতির গাছ আমদানির ক্ষেত্রে কোন গাছ আমদানি করা যাবে, তা উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের দ্বারা তালিকা করা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এলসি খোলার ক্ষেত্রে খ্যাতনামা পরিবেশবিদের সুপারিশ নেয়া; দেশের সব নার্সারিতে দেশীয় গাছপালা সংরক্ষণে বাধ্য করা এবং বার্ষিক জেলা ও উপজেলার বনমেলায় নার্সারি মালিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার পাশাপাশি সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দেয়া; সারাদেশে ক্ষতিকর বিদেশি প্রজাতির কাজ কর্তনের উদ্যোগ নেয়া এবং সরকারিভাবে বিনা মূল্যে বন বিভাগ থেকে দেশীয় গাছ বিতরণের উদ্যোগ নেয়া; দেশীয় ফলমূল ও বনজ বৃক্ষের মাদার ট্রি থেকে বীজ উৎপাদনে গবেষণা জোরদারের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়ভাবে সব উদ্ভিদ ও প্রাণিবিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে জাতীয় গবেষণা পরিষদ তৈরি করা এবং সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে পরিবেশবাদী সব সংগঠনের সমন্বয়ে দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষরোপণের উদ্যোগের পাশাপাশি আগামী এক বছরে দুই কোটি দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষরোপণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০