নিজস্ব প্রতিবেদক: যেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বৈত করারোপণ চুক্তি রয়েছে সেসব দেশের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা হতে অর্জিত অর্থ নিজ দেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রত্যয়নপত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের অর্থ আইনে সংশোধনীর মাধ্যমে তা বাধ্যতামূলক করা হলো। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যস্থাপক মো. আবদুল মান্নানের সই করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনে নিয়োজিত সব অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ৫ জুলাই এনবিআর বাংলাদেশ ব্যাংককে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়। চিঠি অনুযায়ী এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বৈত করারোপণ পরিহার চুক্তি রয়েছে সেসব দেশের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা বাংলাদেশ হতে তাদের অর্জিত অর্থ নিজ দেশে প্রেরণের সময় ব্যাংকসমূহের কাছে দ্বৈত করারোপণ পরিহার চুক্তির সুবিধা দাবি করে উৎসে কর কর্তন ছাড়া বা কম হারে উৎসে কর কর্তন করে বিদেশে অর্থ প্রেরণ করে থাকে। এভাবে অর্থ প্রেরণের আগে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার ক্ষেত্রে দ্বৈত করারোপণ চুক্তির আওতায় কি পরিমাণ কর কর্তন করতে হবে এ সম্পর্কিত এনবিআর সনদ গ্রহণের বিষয়ে অর্থ আইন-২০১৮ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৫৬ সংশোধন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অর্থ প্রেরণের আগে এনবিআরের ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্স উইংয়ের সনদ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে ৫ জুলাই এনবিআরের সিনিয়র সদস্য (ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্স উইং) কালিপদ হালদার সই করা একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের ৩৩টি দেশের দ্বৈত করারোপণ পরিহার চুক্তি রয়েছে। চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশ সমঝোতার ভিত্তিতে করের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুবিধা প্রদান করে থাকে। এ চুক্তির আওতায় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ প্রেরণ করে থাকে। এ অর্থ প্রেরণের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে উৎসে কর কর্তন করা হয়েছে কি-না তার অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অনুমোদন গ্রহণ ছাড়া কম বা উৎসে কর কর্তন ছাড়া অর্থ প্রেরণের এখতিয়ার ব্যাংকের নেই। দ্বৈত করারোপণ পরিহার চুক্তির বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনার মাধ্যমে সুবিধা বা অনুমোদন সংক্রান্ত মতামত প্রদানের আইনগত এখতিয়ার এনবিআরের রয়েছে। সে অনুযায়ী চলতি অর্থবছর অর্থ বিলের এ সংক্রান্ত আদেশে সংশোধন আনা হয়েছে। এনবিআরের ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্সেস উইংয়ের প্রত্যয়নপত্র ছাড়া দ্বৈত করারোপণ পরিহার চুক্তির সুবিধা প্রদান করার বিষয়টি এনবিআরের কঠোর নজরদারি করা প্রয়োজন। সে অনুযায়ী সব ব্যাংক যাতে এনবিআরের বিদেশে অর্থ প্রেরণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা অর্থ প্রেরণের আগে ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্স উইংয়ের সনদ গ্রহণ করে তার কার্যকর ব্যবস্থা যেন সব ব্যাংক নেয় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়।
