নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদেশে বিনিয়োগ অন্যায় কিছু নয় বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বিদেশে বিনিয়োগ যদি অনুমতি না দেয়া হয়, তবে এটা হুন্ডির মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাবে। তার চেয়ে ভালো হবে যদি আমরা সরকারিভাবে অনুমতি দিই। গতকাল ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিকবিষয়ক ও সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা নিয়ম করে দিয়েছি, সবাইকে অনুমতি দেয়া হয়নি। শুধু যারা রপ্তানি করেন তাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। নিজের অ্যাকাউন্টে রপ্তানির বিপরীতে রিটেনশন মানি থাকে, সেখান থেকে তারা রপ্তানির ২০ শতাংশ বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন। সেই ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে শর্ত দেয়া হয়েছে, গ্রস এসেস থেকে লায়াবিলিটি বাদ দিলে যে নেট এসেস থাকে সেখান থেকে ২০ শতাংশ, ২৫ শতাংশের মধ্যে যেটা কম সেই পরিমাণ টাকা তারা বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন।’
চলতি বছর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ২৫ শতাংশ কমে গেছেÑএ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইনভেস্টমেন্ট অন্য জিনিস। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে অন্যরাও আছে। প্রত্যেক দেশেই তাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেটটা আস্তে আস্তে অনুমোদন করে জনগণের বিদেশি বিনিয়োগের জন্য, আমরাও সেই পথে যাচ্ছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি বিদেশে বিনিয়োগ হলে সেখান থেকে আয়ও হবে। আমাদের জনগণই সেখানে গিয়ে চাকরি করবে, আমাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। আমরা যদি বন্ধ করে রাখি, অনুমতি না দিই, তাহলে পিছিয়ে থাকব। আমি মনে করি, এটা আমাদের ভালো উদ্যোগ। এটা নিয়ে আমরা অনেক কাজ করেছি। বিষয়টি হলো, আমাদের দেশে লোকজনের কমপেটেটিভনেস অনেক বেশি, আমাদের সক্ষমতাও অনেক বেশি।’
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) যে পূর্বাভাস দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখছেন এবং মাথাপিছু আয় বাড়বে কীসের ভিত্তিতে এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, গত বছর জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ছিল পাঁচ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এ বছর জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে সাত দশমিক দুই শতাংশ। আমাদের জিডিপির আকার হবে ৪৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ৪৫৫ বিলিয়ন ডলারকে আমাদের যে জনগোষ্ঠী আছে তার সঙ্গে ভাগ দিলেই আমাদের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৭৮৫ ডলারে উন্নীত হবে। এটা হচ্ছে আমাদের এ বছরের হিসাব। আশা করি, আগামী অর্থবছরে আমাদের জিডিপির আকার অর্ধ ট্রিলিয়নের মাইলফলক স্পর্শ করবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফ সবসময় কনজারভেটিভলি তাদের সংশ্লিষ্টরা সব দেশের জন্যই সেভাবেই প্রক্ষেপণ করে। আমার অবশ্যই অতীতের মতো বিশ্বাস, আমরা যা বলেছি সেটা অর্জন করতে সক্ষম হবো। আগামী বছরও আমাদের মাথাপিছু জাতীয় আয় তিন হাজার ৮৯ ডলার হবে, সেই বছর আমাদের জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি হবে সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ, এটা আমার মোটামুটি হিসাব।’
তিনি বলেন, ‘আইএমএফ সব সময় সারাবিশ্বের অর্থনীতি একদিকে বিশ্লেষণ করে, আরেকদিকে তাদের পর্যবেক্ষণ বা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। আমরা প্রত্যাশা করছি সাত দশমিক দুই শতাংশ; এর বিপরীত আইএমএফ বলছে, ছয় দশমিক ছয় শতাংশ আমরা অর্জন করতে সক্ষম হবো।