বিদ্যমান উৎস ও করপোরেট কর পাঁচ বছর বহাল দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পে বিদ্যমান উৎসে কর ও করপোরেট কর সুবিধা আরও ৫ বছর বলবৎ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে নগদ সহায়তার ওপর ১০ শতাংশ আয়কর মওকুফের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি মো. ফারুক হাসান প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। বিজিএমইএ প্রতিনিধিরা ছাড়াও আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন এনবিআর কাস্টমস সদস্য (শুল্ক নীতি) মাসুদ সাদিক, সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা ও সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমেদ।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক বলেন, কভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জ আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালোভাবে মোকাবিলা করে এখন তার ইতিবাচক ফল পাচ্ছি। কভিডের আগের অবস্থার তুলনায় আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। এখন মাসে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানির এমন ঊর্ধ্বমুখী ধারা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ নেয়ার জন্য পণ্যমূল্য কমানোসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে উৎসে কর বিদ্যমান ০.৫০ শতাংশ, করপোরেট কর সাধারণ কারখানার জন্য ১২ শতাংশ এবং গ্রিন কারখানার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আরও ৫ বছর পর্যন্ত বহাল রাখার অনুরোধ করছি। আর উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে নগদ সহায়তার ওপর ১০ শতাংশ হারে যে আয়কর নেয়া হয় তা রহিত করার অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে বেশি সমস্যা হচ্ছে এইচএস কোড দিয়ে কোনো পণ্য চিহ্নিতকরণ। কোডের পণ্য জাহাজীকরণ করতে জটিলতার কারণে ক্রেতার পণ্য পেতে বিলম্ব হচ্ছে। এমন জটিলতা পরিহারের অনুরোধ করছি।

ফারুক বলেন, কভিড-১৯ পরবর্তী অর্ডার বেড়ে যাওয়ার পর থেকে আমাদের সুতার চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেশীয়ভাবে চাহিদার মাত্র ২

শতাংশের মতো জোগান দিতে পারি। সুতার আমদানি চাপ বেড়ে যাওয়ায় এখন দেশীয় উদ্যোক্তারাও সুতা তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছেন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে তুলা আমদানিতে বেনাপোল বন্দরসহ কয়েকটি বন্দরে তুলা আমদানিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। ভারত থেকে বড় চালানের এলসি থেকে আংশিক তুলা আমদানি করতে গেলে স্থল বন্দরগুলো তা করতে দিচ্ছে না। বড় চালানের বিপরীতে ছোট  লটে তুলার চালান আনতে পারলে আমাদের ওই পণ্যের গুদামজাতসহ ব্যয় কমে যাবে। এভাবে সক্ষমতা বাড়বে। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা ও আমদানি-রপ্তানিতে সহজীকরণের অনুরোধ জানান বিজিএমইএ সভাপতি।

জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, পোশাক শিল্পের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি রয়েছে। কভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সরকার যে সুযোগ-সুবিধা পোশাক শিল্পের জন্য দিয়েছে আমি মনে করি সেই সুবিধা নিয়েই আজকে আপনাদের অর্ডার বেড়েছে। আমরাও পোশাক শিল্পের উন্নতি চাই। সমস্যা খুঁজে বের করে তার সমাধান করছে এনবিআর। তবে ঢালাওভাবে সুবিধা দিতে গেলে অনেক ক্ষেত্রে তার অপব্যবহার হতে পারে।

তিনি বলেন, এইচএস কোড সমস্যার ক্ষেত্রে বিজিএমইএ’র বর্ণনা থাকলে তা বিবেচনা করব। একই সঙ্গে পোশাকের পশ্চাৎ শিল্পের সম্প্রসারণে দেশে ইয়ার্ন বা তুলা আমদানি সহজ করার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হবে। প্রাক-বাজেট প্রস্তাবনায় বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে পোশাক শিল্পে সাব-কন্ট্রাক্টের বিপরীতে ভ্যাট আদায় থেকে অব্যাহতি, অনূর্ধ্ব ১০ কেজি ক্যাপাসিটির ওয়াশিং ও ড্রাই মেশিন আমদানিকালে মূলধনি যন্ত্রপাতির মতো রেয়াতি হারে শুল্কায়নের সুযোগ, সব অগ্নিনির্বাপণ পণ্য বা উপকরণ বিকল বা নষ্ট হলে অগ্নি প্রতিরোধক দরজার মতো একই শর্তে প্রতিস্থাপনের জন্য রেয়াতি হারে শুল্কায়নের মাধ্যমে আমদানি সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০