বিদ্যমান পদ্ধতিতে ভ্যাট দেওয়া যাবে মার্চ পর্যন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন বছর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের সব কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্নের ঘোষণা দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু সে বিষয়ে পুরোপুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি। তাই বিদ্যমান পদ্ধতিতে আরও তিন মাস ভ্যাট পরিশোধের ব্যবস্থা চালু রাখতে চায় এনবিআর। তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী অনলাইন পদ্ধতির আইনি কার্যক্রম যথারীতি চলবে।

বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইন) গ্রহণ, ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়া ও অর্থ পরিশোধসহ ভ্যাটের সব ব্যবস্থা অনলাইনে করার পরিকল্পনা নিয়ে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছিল। আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এনবিআরের সক্ষমতা বাড়াতে ৫৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়। সব প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে সেবা দিতে গেল বছরের মার্চ থেকে নতুন করে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ই-বিআইন কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ মুহূর্তে আইনটি কার্যকর না হওয়ায় পুরোনো আইনেই তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্পের বাজেট বাড়িয়ে এরই মধ্যে সফটওয়্যার সংযোজনের কাজও প্রায় শেষ করেছে।

বিদ্যমান আইনের ভ্যাটহারকে সামনে রেখেই প্রযুক্তি সাজানো হয়েছে। গত ১৫ মার্চ থেকে সব শ্রেণির ব্যবসায়ীর জন্য অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করে তা এখনও চলছে। পুরোনো বিআইএনে সাত লাখ ৭৫ হাজার প্রতিষ্ঠানের তালিকা থাকলেও নতুন পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত ৬২ হাজার ১০০টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিদ্যমান ভ্যাট আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিলেও ডিসেম্বরের মধ্যে তা সম্পন্ন করতে পারেনি এনবিআর। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিআইয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি সভা হলেও আইনের অসংগতি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি কোনো পক্ষ।  আইন সংশোধনে এনবিআর সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমসহ চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এনবিআর বলছে, সফটওয়্যার-সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন হলেও আইনি সংশোধন শেষ না হওয়ায় পুরোনো বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএন) বাতিল করতে পারছে না এনবিআর। একই সঙ্গে অনলাইনের মাধ্যমে একাধিক হারে ভ্যাট আদায়ের পর তা সমন্বয় নিয়েও কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। ফলে পুরোনো সাত লাখ ৭৫ হাজার নিবন্ধন বাতিল করে সম্পূর্ণরূপে অনলাইনে যাচ্ছে না এনবিআর। তবে আইনি সমস্যা সমাধানসহ তিন মাসের মধ্যে অনলাইন পদ্ধতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

এনবিআরের সদস্য ও ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. রেজাউল হাসান বলেন, ভ্যাটের একাধিক হার ধরেই সফটওয়্যার নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে কিছু পরিবর্তন এনে ১ জানুয়ারি

পুরোপুরি অনলাইন চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। আইনি পরিবর্তন সম্পূর্ণ করতে পুরোনো পদ্ধতিতে ভ্যাট পরিশোধে আরও তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এপ্রিলে সম্পূর্ণরুপে অটোমেশনে যাবে ভ্যাটের কার্যক্রম।

আটটি উদ্দেশ্য নিয়ে নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়ন করা হয়। এগুলো হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি খাতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, ভ্যাট আইন ব্যবসাবান্ধব করা, রাজস্ব ফাঁকি চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে এনবিআরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ভ্যাট প্রশাসনকে আরও আধুনিক, সুশৃঙ্খল ও সেবাধর্মী করা, জ্ঞানভিত্তিক ভ্যাট প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, শিল্পায়নের প্রসারে সহায়তা করা, সরকারি-বেসরকারি খাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সার্বিক দক্ষতা বাড়ানো ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করার মাধ্যমে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি। তবে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হলেও পুরোনো আইন সংশোধন ও ভ্যাট অনলাইন ব্যবস্থা করে এসব ক্ষেত্রে সফল হতে চায় এনবিআর।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০