শেয়ার বিজ ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখা ‘কঠিন হয়ে পড়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশীয় পণ্যের দাম যেমন বেড়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি যেসব পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে, তার দামও বেড়ে যাচ্ছে। সবকিছুর দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে যে, আমাদের নিজস্ব যতটুকু গ্যাস আছে, তা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখাই কষ্টকর ব্যাপার হয়ে গেছে, অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে গেছে। সেই বিষয়টাও আপনাদের আমি জানাতে চাই। খবর: বিডি নিউজ।
গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’, ‘শেখ জামাল ডরমিটরি’ ও ‘রোজী জামাল ডরমিটরি’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যুদ্ধের পর আমেরিকা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল, ইউরোপ নিষেধাজ্ঞা দিল। অবস্থাটা কিন্তু এ রকম দাঁড়িয়েছেÑএখন তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, ডিজেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে।
ফার্নেস অয়েল, এলএনজি, কয়লা, ডিজেলসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এখন একটা ভয়ানক পরিস্থিতির দিকে সারাবিশ্ব যাচ্ছে। স্যাংশনটা যদি না হতো, তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও করত, আবার তাদের তেল বা ফার্টিলাইজার, গম ও অন্যান্য সাপ্লাইটাও ঠিক থাকত।
সংকট মোকাবিলায় জনগণকে খরচের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমি সবাইকে আহ্বান করেছি, প্রত্যেকের নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে, খরচের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে হবে এবং যতটুকু পারা যায় বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে হবে। বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে হবে।
দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হলেও এখনকার পরিস্থিতিতে আবার লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ আমরা সবার ঘরে দিয়েছি এটা ঠিক, কিন্তু বর্তমানে আমাদের লোডশেডিং করতেই হবে, উৎপাদনও আমাদের সীমিত রাখতে হবে, যাতে করে আমাদের ভর্তুকিটা না দিতে হয়।
আমদানি করা গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখার জন্য সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বলে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে, সেটা কতক্ষণ দিতে পারবে। কারণ আমাদের মানুষের খাদ্য দিতে হবে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, গৃহহীনদের ঘর দিতে হবেÑপ্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।
এ সংকট সামাল দিতে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখন একটাই উপায়Ñএরই মধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি, প্রত্যেক এলাকাভিত্তিক কখন, কোন এলাকায় কত ঘণ্টা লোডশেডিং হবে, এটার একটা রুটিন তৈরি করে সেভাবেই লোডশেডিং করতে হবে, যেন মানুষ সেই সময়টায় প্রস্তুত থাকতে পারে। মানুষের কষ্টটা যেন আমরা লাঘব করতে পারি। সেই বিষয়টাই এখন আমাদের নজরে নিতে হবে। আমি আশা করি, দেশবাসী অন্তত এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।
যুদ্ধের ফলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশও সমস্যায় রয়েছে বলে জানিয়ে মহামারির মধ্যে বিনা মূল্যে বাংলাদেশের মানুষকে টিকা দেয়াসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।