নিজস্ব প্রতিবেদক: সিমেন্ট খাতের কোম্পানি কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পাঁচ দশমিক ছয় মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোম্পানিটির কারখানার ৩নং ইউনিটে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানির কারখানা প্রাঙ্গণে পাঁচ দশমিক ছয় মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা।
এদিকে সম্প্রতি বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স পাওয়ার বগুড়া লিমিটেড। আর এ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের সবটুকু বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বিক্রি করা হবে।
তথ্যমতে, কনফিডেন্স পাওয়ার বগুড়া লিমিটেডের ৯৯ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছে কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংস লিমিটেড। আর কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংস লিমিটেডের ৪১ শতাংশ ইক্যুয়িটি ক্যাপিটাল কনফিডেন্স সিমেন্টের। উল্লেখ্য, কনফিডেন্স পাওয়ার বগুড়া লিমিটেডের বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ১১৩ মেগাওয়াট। কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংস লিমিটেডের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোট চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে কনফিডেন্স পাওয়ার বগুড়া লিমিটেড, কনফিডেন্স পাওয়ার বগুড়া ইউনিট-২ লিমিটেড ও কনফিডেন্স পাওয়ার রংপুর লিমিটেডের উৎপাদনক্ষমতা ১১৩ মেগাওয়াট করে এবং জোডিয়াক পাওয়ার চিটাগং লিমিটেডের ৫৪ দশমিক ৩৬ মেগাওয়াট।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ১৫ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। ওই সময় কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ছয় টাকা এক পয়সা এবং ৩০ জুন ২০১৯ শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়ায় ৬৭ টাকা ২৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে পাঁচ টাকা ৬৭ পয়সা ও ৭৪ টাকা ৭৩ পয়সা।
এছাড়া চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০১৯) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে দুই টাকা ৫১ পয়সা, আগের বছর একই সময় ছিল এক টাকা ৮১ পয়সা। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে এনএভি দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা ৮২ পয়সা, যা ২০১৯ সালের ৩০ জুন ছিল ৬৭ টাকা ২৪ পয়সা। আর প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে দুই টাকা ৭৪ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময় ৪১ পয়সা ছিল।
এর আগে গত ৩০ জুন ২০১৮ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময়ে ইপিএস হয়েছে ছয় টাকা ৯৩ পয়সা এবং এনএভি দাঁড়িয়েছে ৭৬ টাকা। কোম্পানিটি ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাবছরে ১৫ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় ইপিএস হয়েছে ১১ টাকা সাত পয়সা ও এনএভি দাঁড়িয়েছে ৮৪ টাকা ১০ পয়সা। ‘এ’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটি ১৯৯৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।
এদিকে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর দুই দশমিক ২১ শতাংশ বা দুই টাকা ৩০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ১০৬ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ১০৬ টাকা ২০ পয়সা। দিনজুড়ে ৬৭ হাজার ৫৬টি শেয়ার মোট ৩২৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৭১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এক বছরে শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৯৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৯৪ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়।
১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৬৪ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ২৭৯ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট ছয় কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৯টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৪ দশমিক ২৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ১৫ দশমিক ৩২ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ১০ দশমিক ৫৮।