বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিতে হবে আরও ৫-৭ বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারকে বিদ্যুৎ খাতে আরও পাঁচ-সাত বছর ভর্তুকি দিতে হবে। তবে কম দামে যত দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে, ততই ভর্তুকি কমতে থাকবে। এ চ্যালেঞ্জটি বিরাট। এ মুহূর্তে ভর্তুকি না দিলে ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল এক সেমিনারে এসব কথা বলেন।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে রূপান্তর’ শীর্ষক এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি বলেন, দেশে ৮০ লাখ মানুষ এখনও লাইফ লাইনে রয়েছে। এসব গ্রাহককে মাত্র দুই টাকা করে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। এ খাতে ভর্তুকি কমাতে কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন জরুরি। এজন্য কয়লা, পরমাণু ও এলএনজির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাচ্ছে সরকার। কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলে ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসা যাবে। ভর্তুকি না দেওয়া হলে ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।

বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বহুদিন যাবৎ চেষ্টা করছি বেসরকারি খাতে যেতে। ১৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন তো আসে বেসরকারি খাত থেকেই। বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালনের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। একটা নীতিমালা লাগবে। পুরো খাতটি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে সরকারিভাবে। তাই বেসরকারিকরণ করাটা বেশ কঠিন।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ জায়গায় বেসরকারি খাতের একটা আগ্রহ আছে। আমরা পরীক্ষামূলক একটা প্রকল্প নিতে পারি। নীতিমালা তৈরির জন্য মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আলোচনা করছি। বিতরণে না গেলেও ট্রান্সমিশনে আপাতত আমরা চিন্তা করতে পারি। তবে একটা যথাযথ নীতিমালা থাকা দরকার। ভবিষ্যতে কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে বা কী প্রভাব পড়তে পারেÑতা পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।’

উৎপাদনে অনেক প্রাইভেট কোম্পানি কাজ করছে। আমরা এখন টেস্ট কেস বেসিসে প্রাইভেটে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে পারি। পরবর্তীকালে ডিস্ট্রিবিউশন ভেবে দেখা যাবে। অবশ্য পল্লি বিদ্যুতের সমিতিগুলো অনেকটাই প্রাইভেট কোম্পানির মতোই।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি সঞ্চালন-বিতরণও অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। জমির দাম বেশি। আবার উপকেন্দ্রের জন্য জমিও পাওয়া যাচ্ছে না চাহিদামতো।

বর্তমানে শুধু সংযোগ দেওয়ার ওপর মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন শুধু লাইন দেওয়ার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। দ্রুত পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। শহরে ২০ শতাংশ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। গ্রাম-শহরের মধ্যে পার্থক্য কমে যাচ্ছে।’

প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুতে ভর্তুকির দাবি করলেও সম্প্রতি বিদ্যুতের দাম নিয়ে এক শুনানিতে পিডিবি দাবি করেছে, বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রির কারণে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসান হচ্ছে। এ বিষয়ে ভর্তুকি দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি সরকার। না দিয়ে কয়েক দফায় ৩৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। যার বিপরীতে সরকার তিন শতাংশ হারে সুদে কষে যাচ্ছে। এ ঋণের সুদ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। আর এ ঋণের টাকাকে ভর্তুকি বলে প্রচার করা হচ্ছে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০