বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকট আগামী মাসে কাটার আশা প্রধানমন্ত্রীর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: মহামারির মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশ যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটে পড়েছে, তা আগামী মাসে কেটে যাবে বলে আশা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ আশাবাদ প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘কথা ছিল সব ঘরে ঘরে আলো জ্বালবো। আমরা প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন এই ইউক্রেনের যুদ্ধের পর যেহেতু তেল কিনতে অসুবিধা হচ্ছে, গ্যাস আনতে অসুবিধা হচ্ছে। শুধু আমাদের দেশ নয়, আজকে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জার্মানি সব জায়গায়; তারাই তো জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিচ্ছে। তারা নিজেরাই তো হিমশিম খাচ্ছে।’ সূত্র: বিডি নিউজ।

তিনি বলেন, ‘সেখানেও কিছুদিনের জন্য আমাদের কষ্ট পেতে হয়েছে। ইনশাল্লাহ হয়তো আগামী মাস থেকে এত কষ্ট আর থাকবে না।’

তবে এ সংকটকালে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও আমি বলব, তেল-পানি ব্যবহার করা, এক্ষেত্রে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। মিতব্যয়ী হতে হবে। কারণ সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা এখন দেখা দিয়েছে। তার প্রভাব থেকে কিন্তু আমরা মুক্ত নই।’

খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে অনাবাদি সব জমিতে আবাদ করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘কারণ সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু খুবই খারাপ। খুবই ভয়ানক অবস্থা। সেখানে আমাদের নিজেদের উৎপাদন নিজেরা বাড়াতে পারলে ওই দুর্ভিক্ষের আঁচ বাংলাদেশে লাগবে না।’

রিজার্ভ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিলেও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে সঞ্চিতি রয়েছে, তা নিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। আমাদের এখনও যে রিজার্ভ, তা পাঁচ মাসের ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ। আমার তিন মাস রাখলেই কিন্তু যথেষ্ট। এর বেশি রিজার্ভ লাগে না।

জনগণের স্বার্থে রিজার্ভের অর্থ ব্যয়ের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখন কথা হচ্ছে, যারা বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন নিয়েছে, চিকিৎসা নিয়েছে, এখন তারা যদি প্রশ্ন ওঠায় যে টাকা গেল কোথায়?’

ডলারের উচ্চ মূল্যে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার দিকটি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে তো খুব আলোচনা। এই খরচগুলোর দিকে কি কারও একটুও নজর আছে? আমাদের দেখি এখন পত্র-পত্রিকায় এতগুলো মিডিয়া সবাই ওই একই কথা বলে বেড়ায়। তারা কি কখনও খুঁজে দেখেছে যে, কী কী খরচ আমরা করেছি? কীভাবে করেছি?’

রিজার্ভের অর্থ কোথায় গেলÑবিএনপি নেতাদের এমন সমালোচনায় জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর দুর্নীতির কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে এসে তো দুর্নীতি করেনি। দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, এটা তো তারেক জিয়া, খালেদা জিয়া, কোকোÑএরা করে গেছে। এটা তো আমাদের কথা নয়। এটা তো আমেরিকায় ধরা পড়েছে। আমেরিকা থেকে লোক এসে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে যে, সে অর্থ পাচার করেছে। এতিমের জন্য টাকা এসেছে, খালেদা জিয়া একটি টাকা খরচ করেনি, সব টাকা তার নিজের ব্যাংকে রেখে দিয়েছে। তার আইনজীবী রফিক (প্রয়াত রফিক উল হক) সাহেব বলেছিলেন, আপনি দুই কোটি টাকা দিয়ে দেন, মামলা থাকবে না। তাও সে দেয়নি। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য খালেদা জিয়ার শাস্তি। কোকোর টাকা তো আমরা ফেরত আনতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, আজকে তাদের দলের মুখ থেকে প্রশ্ন আসে।’

বিএনপি আমলে ‘হাওয়া ভবন’-এর দুর্নীতির কথাও বলেন তিনি। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমানের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি নানা সময়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হামলার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কই আমরা তো সরকারে এসে এভাবে রিভেঞ্জ নিতে যাইনি। আমরা বরং গণতন্ত্রটাকে অব্যাহত রেখে বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে তাকিয়েছি। কথা বলার জায়গা করে দিয়েছি।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০