বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম পতনমুখী পুঁজিবাজারে

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: নতুন বিনিয়োগকারী টানতে পারছে না পতনমুখী পুঁজিবাজার। করোনার ছুটি-পরবর্তী সময়ে বেশ ভালো অবস্থানে ছিল পুঁজিবাজারে। প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে বাজারে ছিল স্থিতিশীল পরিবেশ। ফলে পুঁজিবাজারে সব শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ে। গত বছর নভেম্বরে শুধু বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটার তালিকাভুক্তির খবরে পুঁজিবাজারে আসে দেড় লাখ বিনিয়োগকারী। এরপর পুঁজিবাজারের অবস্থান নাজুক হতে শুরু করে। ফলে বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী প্রবেশে ভাটা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, জানুয়ারি শেষে পুঁজিবাজারে বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ২৬ লাখ ৩৩ হাজার। ফেব্রুয়ারি শেষে শেষে তা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬২ হাজার ৩৫৭টিতে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে বিও অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ২৮ হাজার ৩৬০টির। অথচ এর আগের মাসে বিও অ্যাকাউন্ট বৃদ্ধি পায় ৮১ হাজার। অর্থাৎ এ মাসের ব্যবধানে বিও খোলার পরিমাণ কমেছে প্রায় ৫৩ হাজার। বর্তমানে বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে পুরুষদের ১৯ লাখ ৬১ হাজার ৩৯৬টি, নারীদের বিও সংখ্যা ছয় লাখ ৪৬ হাজার ৭৩৫টি এবং কোম্পানির বিও রয়েছে ১৪ হাজার ২২৬টি।

একই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএসইর একজন বলেন, অনেক বিনিয়োগকারী আছেন যারা পুঁজিবাজারে প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে ভালোবাসেন। তারা অনেকেই বছর শেষে অ্যাকাউন্ট নবায়ন করেন না। নতুন আইপিও এলে তারা আবারও নতুন অ্যাকাউন্ট খোলেন। আবার বাজার ভালো থাকলে তারা এর সঙ্গে যুক্ত হতে চান। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিশেষ ভালো না থাকার কারণে বাজারের প্রতি তাদের আগ্রহ কমেছে।

স্মরণকালের (২০১০ সালের) ভয়াবহ ধসের পর আর স্বরূপে ফিরতে পারেনি পুঁজিবাজার। মাঝেমধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আবারও পতনের ধাক্কা লেগেছে বাজারে। ফলে বাজারবিমুখ হয়ে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা, যার ধারাবাহিক ধাক্কা লেগেছে বিও অ্যাকাউন্টে। গত ছয় বছরে নবায়ন না করায় বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ৯ লাখ বিও অ্যাকাউন্ট। বর্তমানে বাজারচিত্র বদলে যাওয়ায় আবারও পুঁজিবাজারে ফিরছেন বিনিয়োগকারীরা।

নিয়মানুযায়ী, জুনে বিও ফি পরিশোধ না করলে সেসব অ্যাকাউন্ট এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যেসব হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা থাকে, সেসব হিসাব বন্ধ হয় না। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিযোগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়।

এর আগে পঞ্জিকাবর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এ ফি জমা নেয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুনে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল। বর্তমানে বিও নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০