Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:06 pm

বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়

বিভিন্ন কারণে পুঁজিবাজারের সূচক নিম্নমুখী হতে পারে। এটাই পুঁজিবাজারের ধর্ম। পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান-পতন একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এ সময় বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধরতে হবে। অর্থাৎ তাদের আতঙ্কিত হওয়া চলবে না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে আলোচকদের আলোচনায় এসব কথা ওঠে আসে।

মোশতাক আহমেদ সাদেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক এম মাসুম এবং আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি মো. সাইফুদ্দিন।

অনুষ্ঠানে এ এম মাসুম বলেন, গত সোমবার করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পরই একদিনে বড় ধরনের পতন হয় দেশের পুঁজিবাজারে। ওইদিন দিনশেষে ২৭৯ পয়েন্ট হারিয়ে বাজারে সূচক চার হাজার আট পয়েন্টে নেমে আসে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিক্রির চাপে বহু কোম্পানির শেয়ার ক্রেতাশূন্য হয়ে যায়। আসলে বিনিয়োগকারীদের এভাবে আতঙ্কিত হওয়া মোটেই কাম্য ছিল না। তারা অনেক বেশি পেনিক ছিলেন। এটা ঠিক নয়। এসব সময় তাদের ধৈর্য ধরা উচিত।

ওইদিনের পর টানা দুদিন বাজার আবার ইতিবাচক অবস্থায় ফিরেছে। ফলে বিনিয়োগকারী বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের এ ধরনের আচারণ কখনও যাতে এ রকম না হয়। যতদিন এ ক্যাপিটাল মার্কেট থাকবে সেক্ষেত্রে না বুঝে এভাবে শেয়ার কেনাবেচা করলে এভাবেই বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকেন। এর দায় তাদেরই বহন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক ও পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীর আমানত রয়েছে। তাই এ আমানত নিয়ে ছেলেখেলা করা যাবে না। তাই এখন সময় এসেছে ব্যাংক, আর্থিক খাত ও পুঁজিবাজারে কি কি সমস্যা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে স্বল্পমেয়াদি নয়, দীর্ঘমেয়াদি সমাধায় আসতে হবে।

অন্যদিকে মো. সাইফুদ্দিন বলেন, সম্প্রতি দেশের তিনজন করোনা পাওয়ার আতঙ্কে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। ফলে তারা আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে যান। এটি শুধু আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে হয়েছে তা কিন্তু নয়। বিশ্বের প্রায় পুঁজিবাজারে এ রকম নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। আর বিশ্বে সব পুঁজিবাজারেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি মনস্তাত্ত্বিক ভাব থাকে। অর্থাৎ যখন কোনো একটি ঘটনা সংগঠিত হয়, তখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সে মনস্তাত্ত্বিক একটি প্রভাব পড়ে। সেটাই দেখা গেছে দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। আর মনস্তাত্ত্বিক বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর বাইরে নয়। অনেকেই বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মতো আচারণ করেন। আসলে দেশের পুঁজিবাজারে ইনস্টিটিউশন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বেশি দিনের নয়। পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত কয়টি ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠানে রিসার্স সেন্টার টিম আছে। যে রিসার্স টিম পুঁজিবাজার বিশ্লেষণ করে ধারাবাহিকভাবে বাজারে বিনিয়োগ করবে। এটি একেবারে নাই বলতেই বলা যায়। এসব প্রতিষ্ঠানে রিসার্স সেন্টার বাড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কিছু ব্যাংক ও আর্থিক খাতে একটা অনিয়ম হচ্ছে। আসলে ব্যাংক ও আর্থিক খাত পরিচালনায় মূল বিষয় সুশাসন। যদি কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিপালনে সুশাসন ব্যত্যয় ঘটে তখনই অনিয়ম বিষয়টি ঘটে থাকে। এর ফলে আমানতকারী ভুক্তভোগী হয়। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ