বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থার

কীভাবে পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন? এটা কি সরকারের দায়িত্ব যে, সরকার তাদের লাভ করিয়ে দেবে, নাকি যারা বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। কীভাবে বাজারে বিনিয়োগকারীর আস্থা ফেরানো যায়Ñএটাই এখন বড় বিষয়। সরকার ব্যবসা করতে নীতি-সহায়তা দিয়ে থাকে এবং  বিভিন্ন খাত পরিচালনার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করেছে। ওইসব নিয়ন্ত্রক সংস্থায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তা থাকেন। তাদের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে পরিচালনা ও বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জন করা। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।

হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠের সিনিয়র বিজনেস এডিটর ফারুক মেহেদী ও ইআরএফের সাবেক সভাপতি সুলতান মাহমুদ।

ফারুক মেহেদী বলেন, চলতি বছরের শুরুতে পুঁজিবাজারের সূচক ছিল ছয় হাজারের ওপরে। এখন সূচক ছয় হাজার থেকে চার হাজারে নেমে এসেছে। এটি আসলে পুঁজিবাজারের জন্য ভালো খবর নয়। দেশের অর্থনীতি অনেক প্রসারিত হয়েছে। সে বিবেচনায় কিন্তু পুঁজিবাজার সবচেয়ে নাজুক অবস্থানে রয়েছে। কোনোভাবেই এ বাজারকে ভালো করা যাচ্ছে না। এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য অনেক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ৯ বছরের মধ্যে এবারের মতো প্রণোদনা আগে দেওয়া হয়নি। এছাড়া আরও প্রণোদনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিডিবিএলকে একটি বিনিয়োগ ব্যাংক হিসেবে দাঁড় করানো, অর্থাৎ আইসিবি যদি কোনো কারণে বাজারকে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে বিডিবিএল বিনিয়োগ ব্যাংক বাজার স্থিতিশীলতায় কাজ করবে। এরকম একটি পরিকল্পনা হচ্ছে। আসলে শুধু সহযোগিতা করলেই বাজার ভালো হবেÑএমন নয়। বাজারের মূল সমস্যা হচ্ছে বিনিয়োগকারীর আস্থা। কারণ, এ বাজারে বিনিয়োগকারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যদি তারা মুনাফা করতে না পারেন, তাহলে কেন আসবেন? তাই আগে বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এ পুঁজিবাজারে হাজারো মানুষের বিনিয়োগ রয়েছে এবং অর্থনীতির অনেক খাত এর সঙ্গে জড়িত। বাজার ভালো হলে একদিকে অর্থনীতি ভালো হবে, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরাও লাভবান হবেন। কিন্তু পুঁজিবাজারে সেভাবে উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে না। বাজার নিয়ে যারা কারসাজি করে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে, তাদের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে এবং সচেতন হতে হবে।

সুলতান মাহমুদ বলেন, পুঁজিবাজারে নতুন করে যেসব বিনিয়োগকারী আসছেন, তারাও পুঁজি হারাচ্ছেন। আর পুরোনোদের কথা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। কথা হচ্ছে, কীভাবে এ বাজারে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। এটা কি সরকারের দায়িত্ব যে, সরকার বিনিয়োগকারীদের লাভ করে দেবে, নাকি যারা বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা,  তাদের খুঁজে বের করতে হবে। কীভাবে বাজারে বিনিয়োগকারীর আস্থা ফেরানো যায় বা কীভাবে এখান থেকে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারেন, তা দেখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার কোনো ব্যবসা করে না। সরকার ব্যবসা করতে নীতি-সহায়তা করে। শুধু পুঁজিবাজার নয়, সব ক্ষেত্রেই সরকার সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। সরকার তার বিভিন্ন খাত পরিচালনার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করেছে এবং ওইসব নিয়ন্ত্রক সংস্থায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তা রয়েছেন। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে সেটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা ও বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জন করা।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০