হাসানুজ্জামান পিয়াস: দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানি। ফলে টানা বেড়েছে এই খাতে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর। তবে সম্প্রতি হঠাৎ করেই এই খাতের শেয়ারের প্রতি অনাগ্রহী হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বস্ত্র খাতের শেয়ারের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হওয়ায় মোট লেনদেনে এই খাতের অবদানও কমে গেছে। মোট লেনদেনে এই খাতটির অবদান নেমে এসেছে ২০ শতাংশের নিচে। গতকালের বাজার পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এদিন মোট লেনদেনে বস্ত্র খাতের অবদান ছিল প্রায় ১৮ শতাংশ। এদিন বেশিরভাগ বস্ত্র খাতের কোম্পানিতেই ছিল ক্রেতার আকাল। যে কারণে দিন শেষে লেনদেন কমে গেছে এই খাতে। তবে লেনদেনে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছিল এই খাতটি। গতকাল এ খাতের মোট ৫৭ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। মাত্র ১০টির দর বেড়েছে আর ১৩টির অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি বিমা ও আইটি খাতে ফিরেছেন বিনিয়োগকারীরা। অন্যান্য খাত ছেড়ে তাদের আগ্রহের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এ খাত দুটি। এ কারণে ধীরে ধীরে খাতটির শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন তারা। ফলে মোট লেনদেনেও খাতটির অবদান ক্রমে বাড়ছে। গতকালের বাজারেও এমন চিত্র দেখা যায়।
গতকালের বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা গেছে, সকাল থেকে অন্যান্য খাতের তুলনায় বিমা ও আইটি খাতের শেয়ারে চোখ ছিল বিনিয়োগকারীদের। এ কারণে একযোগে বাড়তে দেখা যায় এ খাতে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। শেষ দিকে বিক্রয় চাপ বেড়ে যাওয়ায় বিমা খাতের একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমতে দেখা যায়। দর বাড়তে দেখা গেছে ৪৫টি আর বাকি সাতটি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। অন্যদিকে আইটি খাতের ১১টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়ে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স দর বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে। ৫ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স দর বৃদ্ধিতে সপ্তম ও দশম অবস্থানে ছিল।
এদিকে গতকাল দিন শেষে মোট লেনদেনে বস্ত্র খাতের একক অবদান ছিল ১৮ শতাংশের বেশি। পরের অবস্থানে ছিল বিবিধ খাত। এ খাতটি গতকালের লেনদেনে প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ অবদান রাখে। এছাড়া প্রকৌশল খাত লেনদেনে ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাত আট শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত সাত দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং আইটি খাত সাড়ে পাঁচ শতাংশ অবদান রাখতে সক্ষম হয়।
এদিকে গতকালসহ মোট তিন কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক বৃদ্ধি পায় সাড়ে ১৫ পয়েন্ট। দিন শেষে সূচক স্থির হয় ছয় হাজার ২৪১ পয়েন্টে। একইসঙ্গে গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে। দিন শেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় এক হাজার ১৫৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যার মধ্যে প্রায় ১১ কোটি ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন। এ মার্কেটে গতকাল লেনদেন অংশ নেয় ৩৪টি কোম্পানি।