Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 5:23 pm

বিনিয়োগকারীর সতর্কতা ও বাজার নজরদারিতে সূচকের পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের পুঁজিবাজার সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে গত সপ্তাহ পার করেছে। এর আগের সপ্তাহে সূচক বৃদ্ধি পেলেও গত সপ্তাহে পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। সপ্তাহটিতে সূচকের সঙ্গে লেনদেনও কমেছে। গত সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। বিনিয়োগকারীরা বাজেট-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকায় এবং সপ্তাহের মাঝে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর কর আরোপ নিয়ে গুজব ছড়ানোর কারণে এ পতন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। আলোচ্য সপ্তাহে বিমা খাতের শেয়ার কেনায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল। তাই আলোচ্য সপ্তাহে দর বৃদ্ধি ও লেনদেনের শীর্ষে ছিল বিমা খাতের শেয়ার।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৪৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৫২১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১০৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৪০২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৬৯টির, দর কমেছে ১১৪টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২০৮টি কোম্পানির। লেনদন হয়নি ১১টি কোম্পানির শেয়ার।

গত সপ্তাহে সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইএক্স ২ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৩৫২ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই৩০ সূচক ৮ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১ দশমিক ১৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২ হাজার ১৯২ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭৮ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় বাজেট ঘোষণার পর বিনিয়োগকারীরা সতর্ক থাকায় এবং বাজারের গতিবিধির ওপর নজর রাখায় পুঁজিবাজার সূচকের পতনে শেষ হয়েছে। যদিও এই সপ্তাহে ইতিবাচক ধারায় বাজার শুরু হয়েছিল। কারণ সুবিধাবাদী বিনিয়োগকারীরা দ্রুত লাভের আশায় খাতভিত্তিক নির্দিষ্ট লাভে নানা শেয়ারে সুযোগের সন্ধান করতে থাকেন। তবে সপ্তাহের মাঝামাঝি বাজার বিক্রয় চাপে পড়ে। গুজব ওঠে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গুজব রটানো হয় সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগে মুনাফার ওপর কর আরোপ করা হবে।

এদিকে গত সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশলী খাতে গত সপ্তাহে দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল ট্যানারি খাতের শেয়ার। গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে। এ খাতে গত সপ্তাহে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর কমে দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাট খাত। ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর কমে সিমেন্ট খাত তৃতীয় স্থানে ছিল।

গেল সপ্তাহ শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহের শেষে পিই রেশিও দাঁড়িয়েছিল ১৪ দশমিক ৫২ পয়েন্টে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৯৯ কোটি ২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৮১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। তালিকাভুক্ত ৩০৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৬৯টির, দর কমেছে ৯৪টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪৪টি কোম্পানির।

প্রধান সূচক সিএএসপিআইয়ের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিএএসপিআই শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৭৬২ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসইসিএক্স সূচক দশমিক শূন্য ১ শতাংশ এবং সিএসই এসএমইএক্স ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১১ হাজার ২২০ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৭৬৩ দশমিক ৩২ পয়েন্টে। সিএসই৫০ সূচক দশমিক ৪০ শতাংশ, সিএসই৩০ সূচক দশমিক ১৩ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৪ দশমিক ১০ পয়েন্টে, ১ হাজার ৩৮৭ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৭৭ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে।