বিনিয়োগকারী হয়রানি বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন

উন্নত দেশ হওয়ার বিভিন্ন পর্যায় সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করছে বাংলাদেশে। উন্নত দেশ হলে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আসে স্বাভাবিকভাবেই। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাহায্য বন্ধ হয়, কম সুদে ঋণ বা সহায়তা প্রাপ্তির সম্ভাবনাও কমে। কেননা সাহায্য তো স্বল্পোন্নত দেশ পাবে, কম সুদে অর্থ সহায়তার দাবিদার তো সেসব দেশই, যে দেশগুলো একটু সহায়তা পেলে এগিয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ নয়। এখন আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে সক্ষমতায় এগিয়ে থাকতে হবে। রপ্তানি বাড়িয়ে, রাপ্তানি পণ্য বাড়িয়ে, বাজার বাড়িয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। ব্যবসার উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎস রপ্তানি বাণিজ্য। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য রপ্তানি বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। কিন্তু পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা বাধা। সে বাধাগুলো কাটানোর চেষ্টা করা হছে। ইপিজেড, এসইজেড, ইজেড প্রভৃতিতে বিনিয়োগকারীরা নানা সুবিধা পাচ্ছেন। 

উদ্যোক্তারা বলছেন, পণ্য রপ্তানিতে বাধার মধ্যে রয়েছে ব্যাংক সুদ, অবকাঠামোগত উন্নয়নে ধীরগতি, বিদ্যুতের সমস্যা প্রভৃতি। বলা হয়ে থাকে, পোশাকশিল্প যে আর্থিক সুবিধা পায়, অন্য শিল্প সেটা পায় না। অন্য শিল্পের জন্যও আর্থিক সুবিধা দেয়া প্রয়োজন। তা না হলে অন্য শিল্প কোনোভাবে বাড়বে না।

রপ্তানি বৃদ্ধি করতে হলে নিরবচ্ছিন্ন ও যৌক্তিক মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে; শিল্পের জন্য দক্ষ মানব মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। গতকাল শেয়ার বিজের প্রধান প্রতিবেদনে শিরোনাম ‘ইপিজেড নমনীয়, হয়রানি করা হচ্ছে বিনিয়োগকারীকে’ পড়েই বোঝা যায় রপ্তানি বৃদ্ধিতে,  রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরও বাধা রয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে ওঠা জরুরি। কেননা উত্তরা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের বিনিয়োগ কার্যক্রম দুই মাস ধরে স্থবির, হয়রানির কারণে দেশীয় প্রতিষ্ঠান উৎপাদন বন্ধ করে আমদানিতে চলে যাচ্ছে, দেশ থেকে ডলার চলে যাচ্ছে। অথচ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার প্রতিনিয়ত উদ্যোগ নিচ্ছে। ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করার পাশাপাশি দিয়ে আসছে নানা ধরনের সুবিধা আর ছাড়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সংস্থার দুই নীতির কারণে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এক সংস্থা বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো প্রতি বছর রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে। প্রতিবারই বলে, গত বছর এত অর্জিত হয়েছিল, এবার এত অর্জিত হতে পারে।

কোনো ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ পরিকল্পনা থাকে। আমাদের খেয়াল করতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে ব্যবস্থা নেয় কি না, নাকি একটি সংস্থা অন্য প্রতিষ্ঠানের কাজে বাগড়া দেয়; প্রকারান্তরে ব্যবসায় বাধা সৃষ্টি করে। শেয়ার বিজের প্রতিবেদনে রাষ্ট্রের দুই প্রতিষ্ঠানের দূরত্বই স্পষ্ট হয়েছে। রপ্তানি বাড়াতে, ব্যবসার বাধা দূর করে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত  করতে এ দূরত্ব দ্রুত মিটিয়ে ফেলা জরুরি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০