বিনিয়োগ অনুকূলে শীর্ষ মূলধনি কোম্পানির শেয়ার

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: দীর্ঘদিন পর ধারাবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে পুঁজিবাজার। টানা আট কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গত মঙ্গলবার কিছুটা নি¤œমুখী হয় সূচক। গতকাল তা ফের ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে গেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, মানি মার্কেট থেকে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ভালো থাকায় এখানে বিনিয়োগ বাড়ছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে আলোচিত ও সর্বোচ্চ বাজার মূলধনি কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে রয়েছে, যে কারণে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বর্তমানে বাজারের শীর্ষ বাজার মূলধনধারী কোম্পানি গ্রামীণফোন। বহুজাতিক এ প্রতিষ্ঠানের বর্তমান বাজার মূলধন ৫০ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বা পিই-রেশিও ১৪। দ্বিতীয় বাজার মূলধনধারী কোম্পানি ওয়ালটন। ৩২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বাজার মূলধনধারী এ কোম্পানির শেয়ারের গতকালের পিই-রেশিও  ছিল ১৯ দশমিক ৯৩।  এর পরের অবস্থানে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন রয়েছে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। গতকাল দিন শেষে এ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ১৮ দশমিক ৫৫। এর পরে রয়েছে বাজারে নতুন আসা কোম্পানি রবি। এ কোম্পানির বাজার মূলধন ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।  বর্তমানে এ কোম্পানির পিই-রেশিও ১২৯ দশমিক ৯। তবে নতুন কোম্পানি হিসাবে এটাকে অতিমূল্যায়িত বলছেন না সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, শেয়ারপ্রতি আয় কম হওয়ায় এ শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত কিছুটা বেশি। কোম্পানির প্রকৃত চিত্র বুঝতে হলে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, রবি একটি বহুজাতিক কোম্পানি। এ ধরনের কোম্পানি থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া যাবে বলে সবারই প্রত্যাশা থাকে। তাছাড়া সব সময় পিই-রেশিওর বিবেচনা কাজে আসে না। নতুন কোম্পানির ক্ষেত্রে এটা বেশি হয়। একটি কোম্পানির প্রকৃত চিত্র বুঝতে হলে অনন্ত এক বছর অপেক্ষা করতে হয়।

শীর্ষ বাজার মূলধনধারী কোম্পানির তালিকায় পরের অবস্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মার বর্তমান পিই-রেশিও ২০ দশমিক শূন্য চার। আর গতকাল পর্যন্ত কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া সর্বোচ্চ বাজার মূলধনধারী কোম্পানির মধ্যে ইউনাইটেড জেনারেশন পাওয়ারের বর্তমান পিই-রেশিও রয়েছে ১২ দশমিক শূন্য পাঁচ। একইভাবে রেনেটার শেয়ারে মূল্য আয় অনুপাত ২০ দশমিক ১১, বেক্সিমকো ফার্মার ১৭ দশমিক ৮৯, ম্যারিকোর ১৮ দশমিক ৭০ এবং আইসিবির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৭০-এ। 

এ প্রসঙ্গে আইসিবির কোম্পানি সচিব রফিক উল্লাহ শেয়ার বিজকে বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শেয়ারের পিই-রেশিও বিবেচনায় নেয়া হয়। কিন্তু সব কোম্পানির বেলায় এটা ঠিক হয় না। পিই রেশিও বেড়ে গেলেই সেই শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে গেছে বলে ভাবা উচিত নয়। সব সময়ই আইসিবির শেয়ার বিনিয়োগকারীদের পছন্দের। আমি মনে করি না যে এ শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের পিই-রেশিও ২০-এর নিচে থাকলে সে শেয়ারে বিনিয়োগ নিরাপদ মনে করা হয়। ২০-এর ওপরে গেলে শেয়ার ধীরে ধীরে অতিমূল্যায়িত হয়ে ওঠে। ৪০-এর ওপরে গেলে সেই শেয়ারকে অতিমূল্যায়িত ভেবে মার্জিন সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানে বাজার, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় সব খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারের পিই-রেশিও রয়েছে ২০-এর নিচে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০