বিনিয়োগ না বাড়লে বাজার ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম

সঞ্চয়পত্রের বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। এরপরও বাজারে বিনিয়োগ আসছে না। সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়া মানেই বাজারে বিনিয়োগ বাড়বে এটা ভাবা ঠিক নয়। বর্তমান অর্থনীতির কথা বিবেচনা করলে দেখা যাবে, রেমিট্যান্স ছাড়া অর্থনীতির অন্যান্য সূচকও  আশানুরূপ নয়। গত সাত বছর ধরে ব্যাংক খাত ভালো অবস্থায় নেই। কয়েক বছর ধরে বেসরকারি বিনিয়োগ স্থির রয়েছে। সর্বোপরি অর্থনীতিতে যে গতি ছিল, এখন তা থমকে গেছে। যদি বিনিয়োগ না বাড়ে, তাহলে পুঁজিবাজারও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইআরএফের সাবেক সভাপতি সুলতান মাহমুদ ও বিডি নিউজ ২৪ডটকমের প্রধান প্রতিবেদক আবদুর রহিম হারমাছি।

সুলতান মাহমুদ বলেন, পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি কেন আসছে না। আসলে বিনিয়োগে আসার মতো অবস্থা এখনও তৈরি করতে পারিনি। সরকার বাজার ভালো করার জন্য অনেক নীতি-সহায়তা দিয়েছে। যারা বাজার পরিচালনায় রয়েছে, তারা এ নীতি-সহায়তা সঠিকভাবে পরিপালন করছে কি নাÑসেটা দেখার বিষয়। আবার বাজারে আইসিবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু আইসিবি সেভাবে তার ভূমিকা পালন করছে না। যদি সেভাবে ভূমিকা পালন করত, তাহলে বাজারের বর্তমান অবস্থা এরকম হতো না। যদিও কদিন ধরে বাজার সামান্য ইতিবাচক দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এ ইতিবাচক বাজারে টার্নওভার, সূচক ও শেয়ারদর এবং বিনিয়োগ বিবেচনা করলে একে ইতিবাচক বলা যাবে না। তারপরও কিছু বিনিয়োগকারীর মধ্যে আস্থা ফিরে আসছে। গত মঙ্গলবার লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আসলে এ লেনদেন যথেষ্ট নয়। মানি ও ক্যাপিটাল মার্কেট একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাজারে প্রায় ৩০টি ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যদি মানি মার্কেটে কোনো সমস্যা দেখা দেয়, সেটির প্রভাব বাজারে পড়ে। আর মানি মার্কেট ভালো থাকলে বাজারও ভালো থাকে।

তিনি আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে বাজার গতিশীল করতে হলে যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া দরকার, তা হচ্ছে: বাজারের সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আছে। বাজার নিয়ে কে কী ভাবে এবং কখন খেলছে, আবার যখন কোনো কোম্পানি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, সেটিকে আবার পতনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেÑসব তথ্যই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে রয়েছে। সম্প্রতি বিএসইসি কিছু কাজ কঠোরভাবে দমন করেছে।

আবদুর রহিম হারমাছি বলেন, সঞ্চয়পত্রের বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। কিন্তু এরপরও বাজারে বিনিয়োগ আসছে না। সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়া মানেই বাজারে বিনিয়োগ বাড়বে এটা ভাবা ঠিক নয়। কারণ, বাজারের যে অবস্থা, তাতে কীভাবে বিনিয়োগকারী আসবে। গ্রামীণফোনের ৫০০ টাকার শেয়ার এখন ৩০০ টাকায় নেমে এসেছে। গত সাত থেকে আট বছর ধরে অর্থনীতিকে গতিশীল দেখা যাচ্ছে। জিডিপির গ্রোথ বাড়ছে কিন্তু পুঁজিবাজার সেভাবে গতিশীল হচ্ছে না। যদি সবকিছুই ঠিকভাবে চলত, তাহলে বাজারও ইতিবাচক হতো। যদি বর্তমান অর্থনীতির কথা বিবেচনা করি, তাহলে দেখা যাবে শুধু রেমিট্যান্স ছাড়া অর্থনীতির অন্যান্য যেসব সূচক রয়েছে, সেগুলো আশানুরূপ নয়। গত সাত বছর ধরে ব্যাংক খাত ভালো অবস্থায় নেই। কয়েক বছর ধরে বেসরকারি বিনিয়োগ স্থির অবস্থায় রয়েছে। সর্বোপরি অর্থনীতিতে যে গতি ছিল, এখন তা থমকে গেছে। এটি আসলে দেশের জন্য হতাশাজনক। যদি বিনিয়োগ না বাড়ে, তাহলে পুঁজিবাজারও ভালো হওয়ার আশা করা যায় না। এ অবস্থায় বাজার দুই থেকে তিন মাস ভালো থাকলেও দীর্ঘমেয়াদি ভালো কিছু আশা করা যায় না।  

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০