Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 4:53 am

বিনিয়োগ শিক্ষার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা

ইদানীং শোনা যাচ্ছে, পুঁজিবাজার জুয়াড়িদের দখলে। বিশ্বের সব বাজারেই কম-বেশি জুয়াড়ি থাকে। এরা বাজারের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী জুয়াড়ি হন না। সেখানে কিছু অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী থাকেন, যারা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করেন। একটি নির্দিষ্ট সময় পর তাদের ইক্যুইটি বিক্রি করেন। কিন্তু আমাদের বাজারে  ভিন্নরূপ দেখা যায়। এখানে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী আসেন স্বল্প সময়ে কীভাবে লাভবান হওয়া যায়। আসলে তারা বিনিয়োগ সম্পর্কে ভালো বোঝেন না। তাদের বিনিয়োগ শিক্ষা খুবই কম। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। মাহমুদ হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আমার স্টক ডটকমের সিইও মো. আলী জাহাঙ্গীর ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সাবির আহমেদ, এফসিএ।

মো. আলী জাহাঙ্গীর বলেন, শোনা যাচ্ছে এখন পুঁজিবাজার জুয়াড়িদের দখলে। বিশ্বের সব বাজারেই কম-বেশি জুয়াড়ি থাকে। এরা বাজারের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী জুয়াড়ি নন। সেখানে কিছু অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী থাকেন। যারা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করেন। তারা এখানে স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ করতে আসেন না। বরং তারা বাজারকে গতিশীল করতে বিনিয়োগ করেন। একটি নির্দিষ্ট সময়ে তাদের ইক্যুইটি বিক্রি করেন। কিন্তু আমাদের বাজারে  ভিন্নরূপ দেখা যায়। এখানে বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করতে আসেন না। বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী আসেন স্বল্প সময়ে কীভাবে লাভবান হওয়া যায়। আসলে তারা বিনিয়োগ সম্পর্কে ভালো বোঝেন না এবং বাজারে কীভাবে বিনিয়োগ করতে হয়Ñএ বিষয়গুলো অবগত নন। এছাড়া তাদের মধ্যে বিনিয়োগ শিক্ষা খুবই কম। যার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০ বছরমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। যেখানে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবারও মেয়াদ বাড়ানো হলো, এতে বিনিয়োগকারীরা আশাহত হয়েছেন। এ ধরনের বিবেচনা শুধু এদেশেই হয়। যেখানে বিনিয়োগের জন্য একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ করা হলো, সেখানে আবার সময় বাড়ানো হলো। কথা হচ্ছে, একজন বিনিয়োগকারী পরিকল্পনা করেই বিনিয়োগ করেন। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখা হলো না। এরই মধ্যে বাজারে এর একটি খারাপ প্রভাব পড়েছে। মিউচুয়াল ফাল্ড ও অন্যান্য ফান্ডের ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো বাজারের পরিবেশকে কখনও ভালো করে না বরং আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়। এখন তা-ই দেখা যাচ্ছে।    

সাবির আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজার সবার জন্য নয়। যারা এ বাজার সম্পর্কে ভালো বোঝেন, তাদের জন্য এটি। আবার যারা বাজারে বিনিয়োগ করতে চান, কিন্তু বাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই, তাদের জন্য রয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সেভাবে পারফরম্যান্স করছে না। বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ড খারাপ অবস্থানে। আসলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর যেভাবে উন্নয়ন হওয়ার কথা, সেটি হয়নি। ওইসব নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অভিজ্ঞ কর্মকর্তার অভাব রয়েছে। অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচক ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে এবং এর আকারও বড় হচ্ছে। একটি দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য যে পরিমাণ অভিজ্ঞ লোকের প্রয়োজন, অর্থাৎ ওইসব জায়গায় দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বসানো হচ্ছে কি না, সেটি দেখার বিষয় রয়েছে।  পুঁজিবাজারের প্রাণ হচ্ছে ইক্যুইটি। কিন্তু যে ধরনের ইক্যুইটি আনা হচ্ছে, তাতে বেশিরভাগ কোম্পানি পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারছে না। বাজারে ভালো কোম্পানি আনতে হলে প্রণোদনার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। গ্রামীণফোন বাজারে আসার পর একটি গতিশীল অবস্থা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখন গ্রামীণফোন নিয়ে যেটা করা হচ্ছে, তাও ঠিক হচ্ছে না বলে মনে করি। 

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ