বিনিয়োগকারীদের দাবিয়ে রেখে বাজার ভালো করা যাবে না

পুঁজিবাজার প্রতিনিয়ত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। হাস্যকর বিষয় হচ্ছে যেখানে বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, সেখানে ডিএসই উল্টো বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে জিডি করল। তাদের অপরাধ গত ২৭ আগস্ট পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ৯ থেকে ১০ জন বিক্ষোভ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ ডিএসই তাদের বিরুদ্ধে কেন জিডি করল। আসলে এটা বিনিয়োগকারীদের প্রতি এক ধরনের হুমকি। এটা কোনোমতেই কাম্য নয়। এভাবে বিনিয়োগকারীদের হুমকি দিয়ে পুঁজিবাজার স্বাভাবিক বা ভালো অবস্থানে ফিরিয়ে আনা যাবে না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাবেক প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ এবং পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি ও সিইও মো. আহছান উল্লাহ।
সুলতান মাহমুদ বলেন, এখন বাজারের যে অবস্থা, তাতে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। আস্থাহীনতা ও তারল্য সংকট এবং মানি মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে বাজারের এ অবস্থা বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। কথাটি অমূলক নয়। ২০১৯ সালে সরকার পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু এর কোনো সুফল এখনও দেখা যাচ্ছে না বরং প্রতিনিয়ত বাজার খারাপের দিকে যাচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। হাস্যকর বিষয় হচ্ছে যেখানে বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, সেখানে ডিএসই উল্টো বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে জিডি করল। ২৭ আগস্ট পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ৯ থেকে ১০ জন বিক্ষোভ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কার স্বার্থে ডিএসই তাদের বিরুদ্ধে জিডি করল। আসলে এটা বিনিয়োগকারীদের প্রতি এক ধরনের হুমকি দেওয়া। কথা হচ্ছে এভাবে বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে জিডি করে পুঁজিবাজার স্বাভাবিক বা ভালো অবস্থানে ফিরিয়ে আনা যাবে না। ডিএসইতে অনেক সচেতন কর্মকর্তা রয়েছেন যারা বাজার সম্পর্কে ভালো বুঝেন এবং বিগত বছরে তাদের কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে বাজার এ অবস্থানে এসেছে। বাজার ভালো করতে চাইলে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। তা না করে অহেতুক বিনিয়োগকারীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে বাজার ভালো করা যাবে না। যদি কেউ মনে করে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ বা নিজেদের অপরাধ লুকিয়ে রাখার জন্য অন্যের ঘারে দোষ চাপিয়ে দিয়ে বিএসইসি ও সরকারের কাছে নিজেরা সাধু সাজবেন, এতে কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হবে না। এটি অতীতেও হয়নি এবং আগামীতেও হবে বলে মনে হয় না। কারণ যিনি সরকারপ্রধান রয়েছেন তার কাছে সব তথ্যই রয়েছে। বাজারের এ পরিণতির জন্য কারা কোন ইকুইটি নিয়ে খেলছেন, এসব বিষয়ে তার কাছে তথ্য নেই এটি ভাবলে ভুল হবে। তাই নিজেদের সংশোধন করতে হবে। বাজার কীভাবে ভালো করা যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে। কারণ সরকার বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যতটুকু উদ্যোগ নেওয়া দরকার, তারা অনেকটা নিয়েছেন। এখন বিএসইসি, ডিএসই, সিএসইসহ বাজারসংশ্লিষ্টদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
মো. আহছান উল্লাহ বলেন, বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। এখন বড় সমস্যা হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট। ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগকারী কমছে। বাজারের লেনদেন ও সূচক কমে যাচ্ছে। একদিকে বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং অন্যদিকে ব্রোকারেজ হাউজের মালিকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এক বছরের অধিক অর্থাৎ যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করবে তাদের কিছু সুবিধা দেওয়া হয়, যেমন এখন ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ১০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়। যদি এ ট্যাক্স ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হয়। এর উদ্দেশ্য হবে বাজারকে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল রাখা।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০