Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:20 pm

বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারমুখো হলে বাজার ভালো হবে

পুঁজিবাজার স্পর্শকাতর জায়গা। পুঁজিবাজারে পতন হবে, আবার পুঁজিবাজার ওপরের দিকে উঠবে, এটাই স্বাভাবিক। যেহেতু বছরের শুরুতে পুঁজিবাজার ইতিবাচক, কাজেই সামনে এর ধারাবাহিকতা আশা করা যায়। যদি বিনিয়োগের পরিবেশ যদি ভালো থাকে, যদি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায় এবং বিনিয়োগকারীরা যদি ব্যাংকমুখী না হয়ে পুঁজিবাজারমুখী হয়, তবে ২০১৯ সালে পুঁজিবাজার ভালো যাবে আশা করা যায়। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন বিএসইসির সাবেক সচিব ও চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি সবুর খান।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ২০১৮ সালের বেশিরভাগ সময়ে পুঁজিবাজারে মন্দাবস্থা ছিল এবং বাজার নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ছিল। কারণ ২০১৮ সালে দেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংকট তৈরির আশঙ্কা ছিল। এজন্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ অবস্থানে ছিল। নির্বাচনের পর থেকে পুঁজিবাজার ইতিবাচক অবস্থানে দেখা যাচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে ফিরে আসছে। দীর্ঘদিন পুঁজিবাজার খারাপ অবস্থান থাকায় বিশেষ করে পিই রেশিও, সূচক এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম অনেক কমে রয়েছে। এখন দীর্ঘমেয়াদি, স্বল্পমেয়াদি এবং ডে ট্রেডিং করার উপযুক্ত সময়। যেহেতু বছরের শুরুতে পুঁজিবাজার ইতিবাচক, তাই সামনে এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে মনে করি। তবে সতর্কতার সঙ্গে জেনেবুঝে বিনিয়োগ করতে হবে।
পুঁজিবাজার হচ্ছে স্পর্শকাতর জায়গা। কারণ পুঁজিবাজারে পতন হবে, আবার পুঁজিবাজার ওপরের দিকে উঠবে, এটাই স্বাভাবিক। যেহেতু বছরের শুরুতে পুঁজিবাজার ইতিবাচক দেখা যাচ্ছে, তাই এটি নিঃসন্দেহে ভালো দিক। তবে বিনিয়োগের পরিবেশ যদি ভালো থাকে, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যদি বৃদ্ধি পায় এবং বিনিয়োগকারী যদি ব্যাংকমুখী না হয়ে কিছুটা পুঁজিবাজারমুখী হয়, সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালে পুঁজিবাজার ভালো যাবে আশা করা যায়।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুুঁজিবাজারসহ আরও বিভিন্ন খাতের অনিয়ম নিয়ে বেশি আলোচনা-সমলোচনা হয়েছে। তবে ব্যাংক খাতে বেশি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব অনিয়মের মূল কারণ ছিল সুশাসনের অভাব। এখন কথা হচ্ছে, এর পরও যদি সরকার সুশাসনের দিকে নজর না দেয় তাহলে কবে দেবে। ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো রয়েছে, ওইসব প্রতিষ্ঠানে সুশাসনের প্রতি কঠোরভাবে সরকারকে নজরদারি করতে হবে। বিশেষ করে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পুঁজিবাজারের প্রতি বেশি নজর দিতে হবে। কারণ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজার। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানে সুশাসনের অভাব দেখা দিলে দেশের জন্য খুবই খারাপ অবস্থা হবে।
সবুর খান বলেন, ২০১৮ সালের বেশিরভাগ সময়ে পুঁজিবাজার তেমন ভালো অবস্থানে ছিল না। অর্থাৎ বেশিরভাগ সময়ই পুঁজিবাজারের অবস্থা খারাপ ছিল। যারা পুঁজিবাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখে, তারাই এই খারাপ অবস্থানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদের জন্য শেয়ার কিনে রেখেছে। কারণ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর ধারণা ছিল সরকার পরিবর্তন হবে না। যেহেতু সরকার পরিবর্তন হবে না, সেক্ষেত্রে ওই শেয়ারের দাম ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে এবং শেয়ারের দাম ভালো অবস্থানে যাবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ