নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংক খাতের পরেই বর্তমানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে বিমা খাতে। অথচ এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম। পিই রেশিও অনুযায়ী বিনিয়োগবান্ধব হলেও এ খাতে টার্নওভারের হার সর্বনি¤œ।
তথ্যমতে, বাজারে মোট লেনদেনের মধ্যে সর্বনি¤œ অবস্থানে রয়েছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। মোট টার্নওভারের মধ্যে সাধারণ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ এক শতাংশ, জীবন বিমা খাতের কোম্পানির শূন্য শতাংশ। খাতগুলোর মধ্যে গত সপ্তাহে সাধারণ বিমা খাতে দৈনিক গড় টার্নওভার হয়েছে পাঁচ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, এছাড়া জীবন বিমা খাতে এর পরিমাণ ছিল দুই কোটি ৯০ লাখ টাকা। তবে মাসের শুরুতে জীবন বিমা খাতে টার্নওভারের অংশ গ্রহণ ছিল এক শতাংশ, এর দৈনিক গড় লেনদেন ছিল দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা। সাধারণ বিমা খাতে টার্নওভারের পরিমাণ ছিল তিন কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
এদিকে, পিই রেশিওর দিক দিয়ে ব্যাংক খাত সর্বোচ্চ বিনিয়োগবান্ধব। এ খাতের পিই রেশিও আট দশমিক দুই পয়েন্টে। এরপরই বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে বিমা খাতে। এ খাতের পিই রেশিও ১২ দশমিক ৯ পয়েন্টে এবং জীবন বিমা খাতের পিই রেশিও শূন্য পয়েন্টে অবস্থান করছে।
জুলাইয়ের শুরুতে ব্যাংকিং খাতের পিই রেশিও ছিল আট দশমিক এক পয়েন্টে, সাধারণ বিমা খাতে ১২ দশমিক দুই পয়েন্টে এবং জীবন বিমা খাতে শূন্য পয়েন্টে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পিই রেশিওর দিক দিয়েও ব্যাংকিং খাতের পরই বিমা খাতে বিনিয়োগনির্ভর পরিবেশ বিরাজ করছে। তাদের মতে, পিই রেশিও ১৫ এর মধ্যে থাকলে ওই খাতের শেয়ার বিনিয়োগবান্ধব হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান বাজারে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী জুন ক্লোজিং কোম্পানির পেছনে ছুটছে। এসব কোম্পানির লভ্যাংশের মৌসুম চলছে। ডিভিডেন্ড লাভের জন্য এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করছে অনেকেই। ফলে জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর লেনদেন বাড়ছে। তবে ক্যাপিটাল গেইনের জন্য বেশ কিছু বিনিয়োগকারী মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করছে। এতে ব্যাকিং খাতের লেনদেন কয়েকদিন আগের তুলনায় বেড়েছে।
তারা বলছেন, পিই রেশিও অনুযায়ী ব্যাংক খাতের পরই বিমা খাতের অবস্থান। তবে বিমা কোম্পানিগুলো হতে যেমন লভ্যাংশ প্রত্যাশা করেছিল বিনিয়োগকারীরা তেমনটি হয়নি। বেশিরভাগ বিমা কোম্পানি ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ে লভ্যাংশ আকারে বোনাস শেয়ার দিয়েছে। তাছাড়া এসব কোম্পানি থেকে ক্যাপিটাল গেইনও তেমন করা যায় না। পাশাপাশি ধসের পূর্ববর্তীতে বিমা খাতের কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেই অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিনিয়োগকারীরা। এরপর থেকে এ খাতের বিনিয়োগে অনেকটা সতর্ক অবস্থানে বিনিয়োগকারীরা। সব মিলিয়ে বিমা খাতের শেয়ারের প্রতি আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
পুঁজিবাজারে বিমা খাতের মোট ৪৭টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এসব কোম্পানি ডিসেম্বরে হিসাব বছর শেষ হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও ডিসেম্বরে হিসাববছর শেষ হয়েছে। তালিকাভুক্ত অন্যান্য কোম্পানির হিসাববছর জুনে শেষ হয়েছে। আর সেসব কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুম চলছে।