শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় বিনিয়োগ সম্মেলন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে সৌদি দূতাবাসে ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের আশঙ্কা প্রবল আকার ধারণ করায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশ দুটি। খবর : বিবিসি।
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভ নিউচিন ও ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্স রিয়াদের সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জনান। জামাল খাসোগি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় এই প্রথম সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিল দেশ দুটি।
যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসিত সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাসোগি গত ২ অক্টোবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর বের হননি। সৌদি আরব অবশ্য বলছে, খাসোগি কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়ে গেছেন। তবে তুরস্কের পক্ষ থেকে এর প্রমাণ চাওয়া হলে তা সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে রিয়াদ। তুরস্কের দাবি, তাদের তদন্তকারীদের হাতে নিশ্চিত প্রমাণ রয়েছে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে তুরস্কে আসা ১৫ সদস্যের একটি সৌদি দল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ আঙ্কারার। তাছাড়া এ ঘটনায় সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতা থাকার আশঙ্কাও প্রবল হয়ে উঠেছে।
এরই মধ্যে আগামী ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তার দেশে ব্যাপকভাবে বিদেশি পুঁজি আকৃষ্ট করার জন্য ওই সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। ভবিষ্যতে তেলের ওপর সৌদি আরবের নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যেই মূলত এ আয়োজন। তবে সৌদি সাংবাদিক খাসোগির অন্তর্ধানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে জেপি মরগান, ফোর্ড, গোল্ডম্যান স্যাকস, গুগলসহ অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এবার সে বর্জনের তালিকায় যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। এ দুই দেশের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধানও সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না। তাছাড়া ব্রিটিশ ধনকুবের রিচার্ড ব্রানসন রিয়াদ সম্মেলেন যোগ দিয়ে সৌদি আরবে ১০০ কোটি ডলার পুঁজি বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি খাসোগি হত্যাকাণ্ডের জের ধরে রিয়াদ সম্মেলন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জামাল খাসোগি সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার পরিকল্পনার বিরোধী তিনি। একসময় সংবাদপত্র আল ওয়াতানের সম্পাদক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন খাসোগি। কাজ করেছেন একটি সৌদি টেলিভিশন চ্যানেলেও। ওয়াশিংটন পোস্ট ছাড়াও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানগুলোতে কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতেন তিনি। সৌদি রাজপরিবারের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। শুরু থেকেই খাসোগিকে হত্যার একটি অডিও প্রমাণ হাতে থাকার দাবি করে আসছে তুরস্ক।
বিনিয়োগ সম্মেলন বয়কটের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের
