শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরব সরকার নতুন কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে সংস্কৃতি ও বিনোদন কেন্দ্রের প্রতি জোর দিচ্ছে এবং দেশটিতে পর্যটক বাড়াতে নতুন নতুন বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করছে। এ সেক্টরে ১০ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল বা ২৬৭ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে সৌদি সরকার। এর ফলে নতুন করে ২২ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে এ সেক্টরে। খবর আরব নিউজ।
দেশটির পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) জানায়, সৌদি আরবের পর্যটন সেক্টর বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনোদন শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পিআইএফ সরকারের ‘ভিশন-২০৩০’-এর লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশব্যাপী অর্থনীতিকে প্রসারিত করতে এ উদ্যোগ।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় তেলনির্ভারতা কমাতে বিকল্প অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে সৌদি সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির পর্যটন, শিক্ষা, হোটেল, সংস্কৃতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করছে। রূপকল্প ২০৩০ অনুযায়ী সৌদি সরকার রক্ষণশীল নীতি থেকে অনেকটা ফিরে এলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি সফর তাদের রক্ষণশীল নীতি বদলে দেয়।
লন্ডনভিত্তিক ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ জনসন টাভেই বলেন, ‘ঠিক এই মুহূর্তে সৌদি নেতারা সৌদি আরবের বাইরে আবুধাবিতে বিনোদন ক্ষেত্র তৈরির দিকে ঝুঁকছে, কারণ সৌদি আরবের তুলনায় আবুধাবি বিনোদনের জন্য বেশি উপযোগী জায়গা।’
এ প্রকল্পে নতুন নতুন কোম্পানির মাধ্যমে যুবসমাজের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
নতুন এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বছরে ৫০ মিলিয়ন পর্যটক আসবে এবং এতে বছরে আট বিলিয়ন সৌদি রিয়াল আয় করা যাবে বলে প্রত্যাশা করছে দেশটির এন্টারটেইনমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি। বিকল্প অর্থনীতিতে ঝোঁকায় ইতোমধ্যে দেশটিতে পর্যটকসংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরে প্রায় ১০ শতাংশ পর্যটক বেড়ে ১২ দশমিক আট শতাংশ থেকে ২২ দশমিক ছয় শতাংশে পৌঁছাবে বলে ধারণা করছে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়।
প্রকল্প অনুযায়ী, লোহিত সাগর উপক‚লে ২০০ কিলোমিটার বিলাসবহুল হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও রিসোর্ট গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পের মধ্যে আরও থাকবে সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর ও আবাসিক এলাকা।
বর্তমানে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক পর্যটক ধর্মীয় তথা হজ-উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে আসেন। আর এসব বিনোদন কেন্দ্র তৈরি হলে ইউরোপ-আমেরিকার পর্যটকদের আকর্ষণ করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত মাসেই সৌদি সংস্কৃতিমন্ত্রী ড. আওয়াদ বিন সালেহ আল-আওয়াদ বলেন, সৌদি আরব হবে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের গন্তব্যস্থল। আগামী ২০২২ সালে লোহিত সাগরের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে। ফলে চার বিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।
গত বছর বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ডবিøউটিটিসি) জানায়, পর্যটন ক্ষেত্র থেকে সৌদি আরব ২৪৪ দশমিক ছয় বিলিয়ন রিয়াল আয় করে।