সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা শতভাগ আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়, যার পুরোটাই আমদানি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আমদানিকৃত জ্বালানি বিপিসির সহযোগী কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে দেশব্যাপী বিক্রি করা হয়। বর্তমানে বিপিসি এসব জ্বালানি তেল লোকসানে বিক্রি করছে। আর সহযোগী পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রেলিয়াম ও যমুনা অয়েল প্রতি টনে ৮০ টাকা করে মার্জিনে তেল বিক্রি করে। ফলে কোম্পানিগুলোর কখনো লোকসান হওয়ার সুযোগ নেই।
বিপিসি সূত্রে জানা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে জ্বালানি তেলের বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৯ লাখ মেট্রিক টন। আর ২০২০-২১ অর্থবছরের মধ্যে বিক্রি ছিল ৬৩ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রয়েছে পদ্মা অয়েল ২১ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ২৩ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন এবং যমুনা অয়েল ১৭ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। কোম্পানিগুলো হিসাব অনুসারে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড নিট মুনাফা করেছে ১৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, মেঘনা পেট্রোলিয়াম করেছে ২০৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং যমুনা অয়েল করেছে ১১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল পদ্মা অয়েলে ১৫৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, মেঘনা পেট্রোলিয়ামে ১৮৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং যমুনা অয়েলের ১৩৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
এ প্রসঙ্গে মেঘনার এমডি মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা বিপিসি কর্তৃক নির্ধারিত দরে জ্বালানি তেল বিক্রি করি। এক্ষেত্রে পণ্যভেদে একেক রকমের মার্জিন পাওয়া যায়, যা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। আর আমরা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হলেও এটা প্রকাশ করা যাবে না। আমরা করিও না। তবে আমাদের কখনও লোকসান হবে না।
এ বিষয়ে বিপিসির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, প্লাটস অনুসারে গত ২৮ আগস্ট প্রতি ব্যারেল ডিজেলের মূল্য ছিল ১৪৭ ডলার ৬২ সেন্ট মার্কিন ডলার। কিন্তু কর সমন্বয় করার পর ১০৯ টাকা করে ডিজেল বিক্রি করা হলে লিটারপ্রতি লোকসান হয় ১৯ টাকা ৬১ পয়সা। এভাবে কেরোসিন ও ফার্নেসে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এছাড়া চলতি বছরের জ্বালানি তেলের দাম বেশি থাকায় গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিপিসি লোকসান করেছে আট হাজার ১৪ কোটি টাকারও বেশি। তারা বলেন, লোকসান হলেও জ্বালানি তেলের মজুত, সরবরাহ ও আমদানিতে কোনো সংকট নেই। এখনো ডিজেলের মজুত ৩২ দিনের মতো আছে। হয়তো সরবরাহ প্রক্রিয়ায় কোনটার মজুত কম থাকে, আবার কোনোটা বেশি থাকে। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত জ্বালানি তেল আমদানির শিডিউল নিশ্চিত করা আছে।