বিপুল চাহিদা থাকলেও আয়োজন নেই

জাকারিয়া পলাশ : বসন্তের আগমনের মধ্য দিয়ে দিন-তারিখের হিসাবে সমাপ্তি ঘটলো শীত মৌসুমের। কিন্তু শীতের আমেজ এখনও পুরোপুরি যায়নি। ফলে বেড়ানো তথা পর্যটনের আমেজ এ মাসের বাকি দিনগুলোতেও উপভোগ করবেন ভ্রমণপিয়াসীরা।  সাপ্তাহিক নিয়মিত ছুটি ছাড়াও টুকটাক সরকারি ছুটির সঙ্গে বাড়তি ছুটি নিয়ে এরই মধ্যে বিপুল মানুষ ছুটি কাটাতে ছুটছেন কক্সবাজারসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটের বিমান ও এসি বাসে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। কক্সবাজারের হোটেল-রিসোর্টগুলোতে অধিকাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। এদিকে বেড়ানোর মৌসুম শেষ হতে চললেও পর্যটন খাতের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তেমন কোনো বিশেষ আয়োজন নেই।

খাত-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একুশের ছুটির আগে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকবে। এরই মধ্যে বিমান ও বাসের টিকিটে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই অগ্রিম বুকিং করে রেখেছেন বাসের টিকিট ও হোটেলের কক্ষ।

অনলাইনে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল বুকিংয়ের তথ্য অনুসন্ধান করে দেখা যায়, জোড়া কক্ষগুলোর চাহিদা এ সময় সবচেয়ে বেশি। থ্রি-স্টার বা তার চেয়ে উন্নত সেবা সম্পন্ন হোটেলগুলোতে প্রায় সব জোড়া কক্ষই ২০-২২ তারিখের জন্য বুকিং হয়ে আছে। ওই সময়ের জন্য রেসোর্ট বিচ ভিউ হোটেলে একটি কক্ষও খালি নেই। নিঃসর্গ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে একটি মাত্র জোড়া কক্ষ খালি ছিল গতকাল পর্যন্ত। বসতি বে রিসোর্টে ২৪ ঘণ্টায় সাধারণের চেয়ে ছয়গুণ বেশি কক্ষ বুকিং হয়েছে। কক্স ইন হোটেলেও গতকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বুকিং হয়েছে ১১টি কক্ষ। কক্সবাজারের শীর্ষ ৩০টি হোটেলের অধিকাংশই দেখা গেছে বুকড। সবগুলো হেটেলের অনলাইন বুকিং ব্যবস্থায় লেখা ছিল ‘হাই ডিমান্ডের’ কথা।

এ প্রসঙ্গে কক্সভিউ রিসোর্টের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম কক্সবাজার থেকে শেয়ার বিজকে জানান, ‘সাধারণ মানের এ হোটেলে ২০০টি কক্ষের প্রায় সবগুলোই বুকিং হয়ে গেছে। সেখানে এখন কোনো কক্ষ ফাঁকা নেই। তবে বিশেষ প্রয়োজনে কিছু সংখ্যক কক্ষের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।’

এদিকে গাড়িতে যাত্রী বৃদ্ধির বিষয়ে সোহাগ পরিবহনের কল সেন্টার থেকে লাকী জানান, ‘দিন ও রাতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে প্রতিদিন ৯টি এসিকোচ যাতায়াত করছে সোহাগের। প্রায়ই এসব বাসে যাত্রীর চাপ কম থাকে। অনেক সময় আসন খালি থাকে। তবে ২১ ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে যাত্রীর চাপ বেশি দেখা যাচ্ছে।’ সোহাগ পরিবহন বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলে নিতে সক্ষম বলে তিনি দাবি করেন।

ছুটিকে সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ পর্যটনে এ বিপুল চাপ সৃষ্টি হলেও সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে-এ খাতে তেমন কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেই। একুশের ছুটিতে পর্যটন করপোরেশন এবং ট্যুরিজম বোর্ডের পক্ষ থেকেও কোনো উদ্যোগের খবর পাওয়া যায়নি।

এ প্রসঙ্গে ট্যুরিজম ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বিদায়ী চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সদস্য মো. জামিউল আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘বিভিন্ন দিবসভিত্তিক উৎসব ও ছুটিতে দেশে অভ্যন্তরীণ পর্যটনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। এখন শহরের কর্মব্যস্ত মানুষ ছুটি পেলেই বেড়াতে চায়। কারণ, ঢাকা যেভাবে বসবাস যোগ্যতা হারাচ্ছে তা মানুষকে বাইরে বেড়াতে যেতে বাধ্য করছে। এটা পর্যটন খাতের জন্য একটা সম্ভাবনা হলেও, এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের খাত-সংশ্লিষ্টরা আয় (ক্যাশ) করতে পারছে না। এ নিয়ে কোনো উদ্যোগও নেই। অন্যান্য দেশে এসব দিবসে বিশেষ আয়োজন করা হয়।’

এসব জটিলতার জন্য সরকারি খাতে আমলাতন্ত্র আর আর বেসরকারি খাতের অদক্ষতা ও অনৈক্যকে দায়ী করেন তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০