বিবিধ খাতের কোম্পানিতে ঝুঁকেছেন বিনিয়োগকারীরা

মো. আসাদুজ্জামান নূর: টানা সাত কার্যদিবস পতনের পর গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব সূচকের উত্থান হয়েছে। উত্থান হলেও গত তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ধারাবাহিক বাজার পতনের মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল ব্যাংক, ওষুধ, জ্বালানি, বস্ত্র, প্রকৌশল, জীবন বিমা প্রভৃতি খাতের কোম্পানিগুলো। তবে গতকাল বিনিয়োগকারীদের এসব খাত থেকে বেরিয়ে বিবিধ খাতের কোম্পানিতে বেশি বিনিয়োগ করতে দেখা গেছে।

গতকাল ডিএসইতে এক হাজার ৩১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ। এর আগে গত ১৯ জুলাই ডিএসইতে এক হাজার ২৬৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। গতকাল ডিএসইতে বুধবারের তুলনায় ৩৭১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা কম লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৬৮২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার।

গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল বিবিধ খাত। এরপর ধারাবাহিকভাবে ব্যাংক, ওষুধ, জ্বালানি, বস্ত্র প্রভৃতি খাতের কোম্পানিগুলো তাদের আধিপত্য ধরে রেখেছে।

গতকাল মোট লেনদেনের ২৩ দশমিক ২৫ শতাংশ অবদান ছিল বিবিধ খাতের। এ খাতে ২৯৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হলেও দরপতন ঘটে সিংহভাগ কোম্পানির। এ খাতের আটটি কোম্পানির দরপতন ঘটে, আর দর বাড়তে দেখা গেছে পাঁচটি কোম্পানির।

দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল মঙ্গলবার লেনদেনের শীর্ষে থাকা ব্যাংক খাত। গতকাল এ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৭৫ কোটি তিন লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গতকাল লেনদেনে অংশ নেয়া এ খাতের ১৬টি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটে। ১১টি প্রতিষ্ঠানের দর বাড়ে ও দর অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের।

লেনদেনের হিসেবে বেশ কয়েক দিন ধরে শীর্ষ পাঁচের মধ্যে থাকতে দেখা গেছে ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোকে। গতকাল লেনদেনের তৃতীয় অবস্থানে থাকা এ খাতের অবদান ছিল ১৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গতকাল লেনদেনে অংশ নেয়া এ খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা যায়। গতকাল ওষুধ খাতের ১৮টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। এর বিপরীতে ১২টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়।

ওষুধ খাতের পর ছিল জ্বালানি খাত। এ খাতে গতকাল ৮৩ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ছয় দশমিক ৫২ শতাংশ। গতকাল জ্বালানি খাতের সিংহভাগ কোম্পানির দর বাড়তে দেখা গেছে। এ খাতের বা ১৮টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি পায়। এর বিপরীতে পাঁচটি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়।

লেনদেনে পঞ্চম অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। টানা পতনের মধ্যেও লেনদেনের শীর্ষ পাঁচে অবস্থান ধরে রাখা এ খাতের অবদান ছিল ৮১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ছয় দশমিক ৩৯ শতাংশ।

শীর্ষ পাঁচের পর গতকাল লেনদেনে অবদান রাখা খাতগুলো হলো যথাক্রমে প্রকৌশল, জীবন বিমা, খাদ্য, সিমেন্ট, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আইটি খাত, বিমা, ট্যানারি প্রভৃতি।

গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে সাত হাজার ৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই৩০ সূচক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬৯৯ পয়েন্টে ও ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫১৮ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়।

গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৭৪ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বেড়েছে ১৫৩টির, হ্রাস পেয়েছে ১৭৯টির এবং দর অপরিবর্তিত ছিল ৪২ কোম্পানির।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০