বিভাগীয় শহরে চাই চাকরির পরীক্ষা

উন্নত সমাজ গঠনের জন্য শিক্ষার প্রয়োজন। কেননা শিক্ষালাভের পর বেকারত্বের বোঝা বহন করা খুবই কঠিন। পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন সবাই দেখেন, কিন্তু কতজন স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন? অনেক সময় স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশা নানা বাধার কারণে থেমে যায়।

একজন মানুষ যখন তার পেশা হিসেবে কাজ খুঁজে পায় না, তখন যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাকে বেকারত্ব বলে। উচ্চশিক্ষিত বেকারত্বের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। কারণ উচ্চশিক্ষা এখন আর কাজ পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। তরুণরা যত বেশি পড়ালেখা করছেন, তাদের তত বেশি বেকার থাকার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ১০০ গ্র্যাজুয়েটের মধ্যে ৪৭ জন বেকার। এছাড়?া আইএলওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে দেড় যুগ আগে ২০০০ সালে সার্বিক বেকারত্বের হার ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১০ সালে তা ৩ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়ায়। ২০১৩, ২০১৬ ও ২০১৭ সালের হিসাবে এই হার একই থাকে (৪ দশমিক ৪ শতাংশ)। বাংলাদেশে পুরুষের ক্ষেত্রে বেকারত্ব ৩ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীর ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। এই থেকে বুঝা যায় বেকারত্বের জীবন একটি অভিশাপের মতো। এর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বেকারত্বের বোঝা সহ্য করতে না পেরে অনেকেই আত্মহত্যার পথ অবলম্বন করছে। এর প্রধান কারণ, একজন চাকরিপ্রার্থী বুঝতে পারেন বাস্তবতা কতটা কঠিন! একজন বেকার ব্যক্তিকে চাকরির সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। চাকরিপ্রার্থী তার জেলা শহর ছেড়ে, বিভাগীয় শহর ছেড়ে চলে যান কেবল একটি চাকরির পরীক্ষার জন্য। কখনও প্রতি সপ্তাহে চাকরির পরীক্ষা থাকে, কখনও এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ অথবা কখনও দু’এক মাস পরপর। যখন একজন বেকার ব্যক্তি নিজের হাত খরচের টাকাই জোগাড় করতে পারেন না, সেখানে প্রতি সপ্তাহ বা মাসে ঢাকায় যাতায়াতের খরচ বহন করা তার কাছে যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। যখন একজন চাকরিপ্রার্থীকে জেলা শহর এবং তার বিভাগীয় শহর অতিক্রম করতে হয়, তখন তাকে আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে হয়। তখন তিনি মানসিকভাবেও অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। এ ছাড়া নারীদের পক্ষে অনেক দূরে গিয়ে চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা অনেক বেশি কঠিন। প্রায়ই পরিবারের আর্থিক অবস্থা এবং আশপাশের পরিস্থিতি নারীদের জন্য বড় বাধা সৃষ্টির কারণ। এ ছাড়া এমন অনেকেই আছেন, যারা দূরবর্তী পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর জন্য পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন না। যার ফলে বেকারদের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে। তাই আমি মনে করি, চাকরিপ্রার্থীদের কষ্ট দূর করতে হলে বিভাগীয় পর্যায়ে চাকরির পরীক্ষা নেয়া উচিত। এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়, দূরবর্তী পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো অনেকের স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। আমরা চাই কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে। বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা হলে চাকরিপ্রার্থীদের কষ্ট অনেকটাই দূর হবে, এটাই প্রত্যাশা।

জেসমিন আক্তার

শিক্ষার্থী

জয়নাল হাজারী কলেজ, ফেনী

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০