নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন খাতে রাষ্ট্রীয় অর্থ ভর্তুকি দেয়ার সংস্কৃতি থেকে সরে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব ধরনের ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসার কৌশল খুঁজে বের করার বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এ কথা জানান। একনেক সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন।
গতকাল একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া ১০টি প্রকল্পের মধ্যে একটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের ‘স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ইন ডিস্ট্রিবিউশন জোন অব বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’ প্রকল্প। এ প্রকল্প অনুমোদনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভর্তুকি কমিয়ে আনার নির্দেশ দেন বলে উল্লেখ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন উল্লেখ করে এমএ মান্নান বলেন, ‘ভর্তুকি ভর্তুকি ভর্তুকি আর কত? সব ধরনের ভর্তুকি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার কৌশল বের করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকারপ্রধান সব ধরনের ভর্তুকি থেকে সরে আসতে বলেছেন। পর্যায়ক্রমে ভর্তুকি থেকে সরে আসতে কৌশল নির্ধারণেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’ তবে কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন বিলাসী খাত থেকে ভর্তুকি কমিয়ে আনা হবে। শিল্প ও বিলাসী এলাকায় আর ভর্তুকি দিতে চায় না সরকার। তবে কৃষি ও বস্তি এলাকায় ভর্তুকি অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে ভর্তুকির অপব্যবহার হয়। অনেকে ভর্তুকির সুবিধা পান না। অর্থনৈতিকভাবেও এটি গ্রহণযোগ্য নয়। কেউ পাচ্ছেন, কেউ পাচ্ছেন না।’ চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের হার দুই শতাংশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেখানে সারাবিশ্ব করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল, সেখানে আমারা এগিয়ে গেছি, এটা ইতিবাচক। এর কারণ হলো জনগণের পরিশ্রম।’
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্র্রী আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে সব জেলায় নভোথিয়েটার স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ফাইভ-জি শুরু করা এবং দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপনের কাজ আরও দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেন তিনি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত প্রকল্প পাস করতে গিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেন, হাসপাতালের জন্য যেসব যন্ত্রপাতি কিনবেন, সেগুলোর জন্য জনবল ঠিক করেন, যাতে যন্ত্রপাতি নষ্ট না হয়।’ এছাড়া ম্যানগ্রোভ বন সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।