শেয়ার বিজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমসটেক নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কভিড-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ এবং পশ্চিমের রাজনৈতিক সংকটের প্রভাব মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোর পারস্পরিক স্বার্থে এ ফোরামটি হতে পারে একটি কার্যকর হাতিয়ার। গতকাল বুধবার শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে অনুষ্ঠিত ‘পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ’ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। খবর: বাসস।
বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মালট্রি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) ফোরামের ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে শেখ হাসিনা এ অঞ্চলের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে একটি টেকসই এবং প্রতিকূলতা সহিষ্ণু বঙ্গোপসাগর অঞ্চল পুনর্গঠনের জন্য অভিন্ন কৌশল খোঁজার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিমসটেক সদস্যভুক্ত ৭টি দেশে ১৫৪ কোটির বেশি লোকের বসবাস, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশের বেশি উল্লেখ করেÑপ্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিশাল জনসংখ্যা কেবল একটি চ্যালেঞ্জ নয়, এটি একটি বড় সুযোগও।’
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তিন দফা প্রস্তাব রাখেন এবং সব নেতাদের সহযোগিতায় ১৪টি সেক্টরকে সক্রিয় করে প্রক্রিয়াটিকে কার্যকর করার আহ্বান জানান।
প্রথম দফায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনগণের স্বার্থে অবিলম্বে বাস্তব সুবিধা নিশ্চিত করতে বিমসটেক এফটিএ, বিমসটেক সেন্টারগুলো এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র, এনার্জি সেন্টার, কালচারাল কমিশন ইত্যাদি, সংযোগ প্রকল্প, বিদ্যুতের গ্রিড লাইন সংযোগে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়ন ও কার্যকর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
দ্বিতীয় দফায় তিনি বলেন, অন্যান্য সব আইনি উপকরণ এবং নীতি-সংক্রান্ত চলমান প্রক্রিয়া, যা এখনও সম্পন্ন হয়নি, সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেন।
পরিশেষে তৃতীয় দফায় তিনি উদীয়মান হুমকি মোকাবিলা এবং নতুন সুযোগ গ্রহণের লক্ষ্যে বিমসটেকের বাইরে প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণ করে সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়ার জন্য সংস্থাটিকে ক্ষমতায়নের পরামর্শ দেন।
শ্রীলঙ্কা ভার্চুয়ালি এ পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘বিমসটেক-টুওয়ার্ডস এ রেসিলেন্ট রিজিয়ন, প্রোসপারাস ইকোনমিকস অ্যান্ড হেলদি পিপলস।’ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসের সভাপতিত্বে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিমসটেকের সদস্যভুক্ত দেশগুলোয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য নেতৃত্বদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বিমসটেক কাঠামোর বাস্তবায়নে সহযোগিতা বাড়াতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিমসটেক সহযোগিতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মাল্টিমডেল পরিবহন সংযোগের কথা দুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তার দেশ বে অব বেঙ্গল রিজিয়নে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সরকারপ্রধান বলেন, তিনি এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের কারিগরি সহযোগিতায় সদস্য দেশগুলোর প্রণীত বিমসটেক ট্রান্সপোর্ট কানেকটিভিটি মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণে আজ বিমসটেক নেতাদের সঙ্গে খুশি মনে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা কৌশলের কাঠামোর মধ্যে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ব্যাপারে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘এ জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে এবং বিমসটেক কনভেনশন অন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড কনভেনশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)-এর অধীনে সব কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। পাশাপাশি বিমসটেক ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর্স ফোরামের কাঠামোর অধীনে নিয়মিত নিরাপত্তা পরামর্শে অংশ নিচ্ছে।’
সরকারপ্রধান অভিমত প্রকাশ করেন, স্থায়ী সচিবালয় এবং মহাসচিব তাদের সমন্বয় এবং সুবিধা কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি বলেন, ‘আয়োজক দেশ হিসেবে অবকাঠামো জোরদারে প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।