নিজস্ব প্রতিবেদক: ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকার দুর্নীতি মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাবেক ও বর্তমান ২২ কর্মকর্তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়নি। তারা যেমন আছেন তেমন থাকবেন আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ও ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দিয়েছেন।
গতকাল তাদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল। ২১ আসামি হাজিরা দেন। একজন অসুস্থ থাকায় সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী তারিখ ধার্য করেন।
দুদকের বিশেষ পিপি মোশারফ হোসেন কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর তিনজনের জামিন আবেদন শুনানি হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করেন। গত বছর ১৫ মার্চ ২২ আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
এর আগে গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি মামলায় আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিনের আবেদন করলে হাইকোর্ট এই কর্মকর্তাদের জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানান ও তাদের ৩ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের ওই নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিরা জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তাদের জামিন শুনানি পেছানো হচ্ছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিমানের সাবেক ফ্লাইট ক্যাপ্টেন (অপারেশন) ইশরাত আহমেদসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাদের মধ্যে ২৩ জন হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে একজন বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রথমে নিজেদের লাভের জন্য এবং পরে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে ইজিপ্ট এয়ারের দুটি উড়োজাহাজ ইজারা ও পুনরায় সরবরাহ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকা লোকসান করে।
দুদক সূত্র জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ২০১৪ সালে ইজিপ্ট এয়ারের কাছ থেকে ৫ বছরের চুক্তিতে দুটি বোয়িং ৭-২০০ ইআর মডেলের উড়োজাহাজ ইজারা নেয়। প্রথম বছরের শেষে দুটি উড়োজাহাজেরই ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। ইঞ্জিনগুলো ১২-১৫ বছরের পুরোনো ছিল।
উড়োজাহাজ সচল রাখার জন্য ইজিপ্ট এয়ারের কাছ থেকে আরেকটি ইঞ্জিন ইজারা নেয়া হয়। দেড় বছর পর সেটিও নষ্ট হয়ে যায়।
এতে ৫ বছরে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তদন্তে এ তথ্য উঠে আসে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি প্রথমে বিষয়টি খতিয়ে দেখে এবং দুটি উড়োজাহাজ ইজারা নেয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের খোঁজ পায়। পরে দুদককে বিষয়টি খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়। এরপর দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান শেষে দুদক এই মামলা করে।