নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমদানিকৃত সকল পণ্যের বাংলাদেশ বিমানের গুদামের ফ্রি টাইম পরবর্তী স্টোরেজ চার্জ মওকুফ করেছে সরকার। বুধবার (২৯ এপ্রিল) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব সাবেরা আক্তার সই করা আদেশ জারি করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে খালাস নিতে না পারায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের গুদামে পণ্যের স্তূপ জমে। যার মধ্যে বেশিরভাগই তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল। অবস্থা এমনই যে, গুদামের ভেতরে জায়গা না থাকায় আমদানি করা পণ্য খোলা আকাশের নিচে রাখতে হচ্ছে। সাধারণ ছুটির কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ।
এসব পণ্য খালাস না হওয়ায় ব্যবসায়িরা গোডাউন চার্জ মওকুফের দাবি করছিলেন। সে কারণে পণ্যজট কমাতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে পণ্যজট কমাতে স্টোরেজ চার্জসহ সব ধরনের চার্জ মওকুফ করতে বিমানমন্ত্রীকে চিঠি দেয় এফবিসিসিআই। এরই প্রেক্ষিতে এ চার্জ মওকুফ করা হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনারজট কমাতে বন্দর ডেমারেজ চার্জ মওকুফ করে সরকার।

আদেশে বলা হয়, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ২৬ মার্চ হতে সরকারি সিদ্ধান্ত মতে লকডাউন চলমান। এ কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এবং যাতায়াত ব্যবস্থা সীমিত রয়েছে। সরকার লকডাউনের কারণে ২৬ মার্চ হতে লকডাউন চলাকালীন সময় পর্যন্ত আমদানিকৃত এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড এর ওয়্যারহাউজে রক্ষিত সকল পণ্যের ফ্রি টাইম পরবর্তী স্টোরেজ চার্জ মওকুফের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

আরো বলা হয়, ‘লকডাউন চলাকালীন সময়ে আমদানিকৃত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড এর ওয়্যারহাউজে রক্ষিত ডেলিভারির জন্য অপেক্ষমনান সকল পণ্যের ফ্রি টাইম পরবর্তী স্টোরেজ চার্জ মওকুফের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।’
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সাধারণ ও বাণিজ্যিক পণ্যের ক্ষেত্রে আমদানির দিন থেকে ৫ম দিন পর্যন্ত গুদাম ডেমারেজ নেয়া হয় না। কিন্তু প্রতি কেজি পণ্যের হ্যান্ডলিং চার্জ সাড়ে ৩ টাকা নেয়া হয়। এরপর ৬ষ্ঠ থেকে ১৫তম দিন পর্যন্ত ইউনিটপ্রতি (৫০ কেজিতে এক ইউনিট) ২৫ টাকা হারে, ১৫ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত ইউনিটপ্রতি ৫০ টাকা হারে এবং এক মাস পর প্রতিদিনের জন্য ১০০ টাকা হারে গুদাম ডেমারেজ দিতে হয়।
একই সঙ্গে ডেমারেজর ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয় আমদানিকারকদের। গুদামের ধারণক্ষমতা ১২শ’ টন। বর্তমানে দ্বিগুণের বেশি পণ্য গুদামে রয়েছে। স্থান না থাকায় রানওয়েতে রাখা হয়েছে অনেক পণ্য।
###