নিজস্ব প্রতিবেদক: চোরাই স্বর্ণ উদ্ধারের অভিযানে বিমানের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ। দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিমানের টয়লেট থেকে ১২০টি স্বর্ণবার আটক করে কাস্টমস গোয়েন্দা। এর দাম প্রায় ১০ কোটি টাকা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি। তবে বিমানের লোকজন জড়িত বলে সন্দেহ করছে কাস্টমস গোয়েন্দা।

স্বর্ণের বিরাট এ চালান আটকের পর গতকাল কাকরাইলে কাস্টমস গোয়েন্দার প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মহাপরিচালক বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিরুদ্ধে সহযোগিতা না করার অভিযোগ করেন।
রউফ বলেন, ‘বিমানের বডিতে কয়েকটি স্পর্শকাতর জায়গায় স্ক্রু দিয়ে খুলে চোরাচালান পণ্য ঢুকিয়ে রাখা হয় জানি। ১২০টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের সময় বিমান কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলাম কয়েকটি সেনসেটিভ প্লেস খুলে দিতে, তারা দেয়নি। তারা জানায়, টেকনিশিয়ান নেই, চিঠি লিখতে হবে, চিঠি দেন। খুব ভালো সহযোগিতা বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে পেয়েছি বলে বলতে পারব না।’

স্বর্ণের বারগুলো বিমানের টয়লেটে টিস্যুবক্স রাখার চেম্বারের নিচে প্রকোষ্ঠে এবং ব্যবহৃত টিস্যু রাখার জায়গায় কালো স্কচটেপে মুড়িয়ে রাখা ছিল। ১৩ কেজি ৯২০ গ্রাম ওজনের এই বারগুলো ছয়টি বান্ডেলে ছিল। আটক স্বর্ণবারগুলো ঢাকা কাস্টম হাউসের মূল্যবান গুদামে জমা দেয়া হয়েছে। কাস্টমস আইন অনুযায়ী, বিভাগীয় মামলা ও একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।

রউফ বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, বিমানে যাত্রী ওঠার আগে এসব রাখা হয়। স্বর্ণ উদ্ধারের সময় বিমানের কেউ ছিল না। বিমানের কাউকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। বিমানও জব্দ করা হয়নি। থানায় মামলা হয়েছে, তারা তদন্ত করবে।’ বিমানের কোনো ক্রুকে গ্রেপ্তার না করা বা বিমান জব্দ না করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রউফ বলেন, ‘গ্রেপ্তার বা বিমান জব্দ করতে পারলে ভালোই হতো।’ তবে জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিবেচনায় তেমন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিমান পথে অবৈধভাবে আসা ৪০ দশমিক ১১ কেজি স্বর্ণ আটক করা হয়েছে, যার দাম প্রায় ২৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে ১৭৪ দশমিক ৪৯ কেজি এবং এর আগের অর্থবছরে ১৮০ দশমিক ৩৫ কেজি চোরাই স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ইদানীং স্বর্ণ চোরাচালান বেড়েছে মন্তব্য করে মহাপরিচালক রউফ জানান, বৈধভাবে দুটি স্বর্ণের বার আনা লোকের সংখ্যাও বেড়েছে।