নিজস্ব প্রতিবেদক:হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চীনা দূতাবাসের ১৩০ কার্টন এন-৯৫ মাস্ক চুরির ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুই কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় বেবিচকের তদন্ত কমিটির সুপারিশে ইতোমধ্যে তাদের চাকরিচ্যুতও করা হয়েছে।
সূত্র বলছে, গত জুনের মাঝামাঝি বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের গুদাম থেকে এসব মাস্ক চুরি হলেও এতদিন ধামাচাপা দিয়ে রাখে বিমান। গতকাল শনিবার ঘটনাটি ফাঁস হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে উপহার দিতে চীনা দূতাবাসের ১৩০ কার্টন এন-৯৫ মাস্ক আমদানি করে তমা কনস্ট্রাকশন নামে একটি কোম্পানি। গত ৬ জুন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে এসব মাস্ক। শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের মাধ্যমে আনা এসব মাস্কের ওজন ছিল এক হাজার ৬০৫ কেজি। বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এসব মাস্ক গ্রহণ করে।
পরে দূতাবাসের পণ্য হিসেবে আসা এসব মাস্ক বিমানের গুদামে রাখা হয়। কাস্টমসসহ অন্য সব প্রক্রিয়া শেষে এসব পণ্য গ্রহণ করতে যায় চীনা দূতাবাসের ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট বারল প্যাকার্স অ্যান্ড শিপার্স। ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট কর্মীরা সেখানে দেখতে পান ১৩০ কার্টনের মধ্যে ২০ কার্টন ছেঁড়া ও ফাটা। তারা পণ্য গ্রহণ না করে বিষয়টি দূতাবাসকে জানায়।
বিষয়টি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলে গত ২২ জুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বেবিচকের তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মী, ফরওয়ার্ডিং এজেন্টসহ বিভিন্ন জনের সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুই কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের শাস্তির সুপারিশ করা হয়।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই ওই দুই কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করে বিমান।
বিষয়টি স্বীকার করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, ঘটনাটি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেছে। তমা কনস্ট্রাকশনের আমদানি করা মাস্ক চুরির ঘটনায় বেবিচকের তদন্ত কমিটি অনেকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে। বিমানের দুই কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তখনই আমরা তাদের শাস্তি দিয়েছি। তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমরা কোনো চোরকে রাখতে চাই না। বিমানে কোনো চোরের জায়গা নেই। আমরা এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে।
এর আগেও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি কোম্পানির আমদানি করা এন-৯৫ মাস্ক চুরির ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের জন্য তিন লাখ এন-৯৫ মাস্ক আমদানি করা হয়েছিল। এ চালানেরও কিছু মাস্ক চুরির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় হয়।