উড়োজাহাজের এসি বিকল থাকায় মাঝ আকাশ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ঢাকায় ফিরে আসার খবর প্রকাশিত হয়েছে গতকালের শেয়ার বিজে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বিমানের ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ঢাকা থেকে রওনা হয়। তবে এসি থেকে যে বাতাস বের হচ্ছিল তাতে বিমানের কেবিন ঠান্ডা হচ্ছিল না। যাত্রীদের বিরক্তির বিষয়টি কেবিন ক্রুর মাধ্যমে পাইলটকে জানানো হয়। পরে পাইলট ঢাকায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ পেয়েও জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হয়ে উঠতে পারেনি। একসময় বিমানের সেøাগান ছিলÑ আকাশে শান্তির নীড়। এখন সেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির উড়োজাহাজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলা যায়।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মিত হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি ও আশাবাদ ছিল যে, ভোগান্তি কমবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটেই সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। বিমান উড্ডয়নের আগে বেশ কয়েক ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা যাছাই করা হয়। সব ঠিক থাকলেই উড্ডয়নের সবুজ সংকেত মেলে। বিমানের এসি কাজ না করায় প্রতীয়মান হয় এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতি রয়েছে। এর আগেও চেক-ইন কাউন্টার, মালামাল আসার বেল্টে ও নিরাপত্তা তল্লাশির ক্ষেত্রেও নানা অনিয়মে যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। মালামাল নেয়ার ট্রলি পেতেও যাত্রীদের গলদঘর্ম হতে হয়।
বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত ট্রলি না থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরেও টার্মিনালের ভেতরে ও বাইরে ট্রলি ফাঁকা না পেয়ে অনেক যাত্রীকে মাথায়, হাতে ব্যাগ বহন করতে হয়েছে। ‘ট্রলি মেরমাতের কাজই যেন শেষ হয় না। কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে কেন ট্রলি মেরামত করে না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এটা আগে থেকে পরিকল্পনা না করা এবং অব্যবস্থাপনার একটা দৃষ্টান্ত।
জনবলসংকট অব্যবস্থাপনা কিংবা কারও দায়িত্বহীনতায় যাত্রীদের ভোগান্তি নেনে নেয়া যায় না। ভাবতে হবে, কেন যাত্রীরা বিমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের। চেক-ইন কাউন্টারের সেবা ও যাত্রীদের মালামাল উড়োজাহাজে তোলা ও নামানোসহ যাত্রীসেবা এবং বিভিন্ন বিমান সংস্থার সেবা কার্যক্রম এ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের অধীন। কিন্তু বিমানের এ কাজের জন্য এমনিতেই পর্যাপ্ত জনবল নেই। পর্যাপ্ত জনবল না থাকলে প্রত্যাশিত সেবা নিশ্চিত করা যাবে না। বিমানের এসি বিকল থাকায় মাঝ আকাশ থেকে একটি ফ্লাইট ঢাকায় ফিরে আসার খবর প্রবাসী ও বিদেশি নাগরিকদের কাছেও নেতিবাচক বার্তা দেবে। বিমানবন্দরের যে অব্যবস্থাপনা, সেটা পরিকল্পনাহীনতা, সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও জনবলের ঘাটতির কারণে সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় স্বার্থকে বিবেচনায় রেখে এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
