বিমানের লোভনীয় পদে থাকা কেবিন ক্রুরা এখনও সদম্ভে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও তাদের আশীর্বাদপুষ্ট বিমানের সুবিধাভোগী এবং ভিআইপি ফ্লাইটে দায়িত্ব পালনকারী দাপুটে ক্রুরা বহাল তবিয়তে আছেন। গত ১৫ বছর ধরে বিমানের লোভনীয় পদগুলো দখলে রেখেছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে আগামী ৫ অক্টোবর বিমানের সাধারণ বার্ষিক সভার (এজিএম) প্রস্তুতি নিচ্ছেন কেবিন ক্রু সংগঠনের নেতারা। এ নিয়ে অন্যদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। দুপক্ষের মধ্যে যে কোনো মুহূর্তে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কতিপয় মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মীর আশীর্বাদপুষ্টদের মধ্যে অন্তত ৩০-৩৫ জন কেবিন ও ককপিট ক্রু রয়েছেন। বিমানের ভালো ভালো ফ্লাইট দেয়া হয়েছে তাদের। বর্তমানে ভিআইপি ফ্লাইট না থাকলেও কমার্শিয়াল ফ্লাইটে দায়িত্ব পালন করছেন বিমানকর্মীরা।
ভুক্তভোগী কয়েক কেবিন ক্রু জানান, নানা তদবির ও চেষ্টা করেও অন্যরা এসব ফ্লাইটের ধারেকাছেও যেতে পারেননি। সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যে সরানো হয় তাদের এক প্রভাবশালী উপদেষ্টার আশীর্বাদপুষ্ট বিমানের সিইও জাহিদুল ইসলাম ভূঁয়াকে। তবে বাকি কর্মকর্তা-কর্মচারী বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

অভিযোগ, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসসহ প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের ফ্লাইটে তাদের পছন্দের কেবিন ও ককপিট ক্রু ছাড়া অন্য কাউকে ডিউটি দেয়া হতো না। ঘুরেফিরে কয়েকজন কেবিন ক্রু আর ককপিট ক্রু এসব ফ্লাইট পরিচালনা করতেন দাপটের সঙ্গে। ফ্লাইটে এসব ক্রু ভিআইপির সঙ্গে সেলফি তুলতেন। তারপর সেগুলো দেখিয়ে বিমানজুড়ে সৃষ্টি করতেন ত্রাসের রাজত্ব।

এ ছাড়া বদলি, পদোন্নতি, বিদেশে লোভনীয় স্টেশনে পোস্টিংসহ নানা অনিয়ম করতেন এসব ক্রু। তাদের মধ্যে অনেকে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ ক্ষেত্রে পুরো ফ্লাইটই একরকম কিনে ফেলতেন চোরাকারবারি গডফাদাররা। তারপর ওই ফ্লাইটের ডিউটি দেয়া হতো তাদেরই পছন্দের কেবিন ক্রু ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। শুধু কেবিন ক্রুই নন, ককপিট ক্রু অর্থাৎ পাইলট, ফার্স্ট অফিসার ও প্রকৌশল বিভাগের কতিপয় প্রকৌশলীও নিয়েছেন এই সুযোগ। এ ব্যপারে বিমানের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক বুসরা ইসলাম জানান, শুধু কেবিন ক্রু নন, যে কোনো কর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে বিমানের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হয়। কেবিন ক্রু সংগঠনের নেতাকর্মীরাই শুধু ভালো ভালো ফ্লাইটে দায়িত্ব পালন করবেন, এমন নিয়ম নেই বিমানে। কোনো কর্মীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাননি তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০