নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বুধবার বিমা খাতের চমকে উত্থান হয়েছে। অন্য সব খাতের চেয়ে বিমা খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এতে টাকার অঙ্কে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকার বেশি। বেশিরভাগ সময় বিমা খাতের দাপট থাকে বাজারে। তবে মাঝে মধ্যে অন্য খাতও দাপট দেখায়। গতকাল বিমা খাতের একক আধিপত্যে এদিন ৪ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে যায় প্রধান সূচক।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বিমা খাতের ৮৮ দশমিক ১০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এদিন খাতটিতে ৩৭টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার বিপরীতে কমেছে তিনটির দাম। এরপর কাগজ ও মুদ্রণ খাতের তিনটি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে শেয়ারদর কমেছে একই সমান কোম্পানির। এতে শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় খাতটির ৫০ শতাংশ কোম্পানি। এর পরের অবস্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের শেয়ারদর। খাতটির চারটি কোম্পানি শেয়ারদর বাড়ার তালিকায় নাম লেখানোর বিপরীতে কমেছে ১১টি কোম্পানির। গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, সিরামিক, করপোরেট বন্ড ও আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিক্রির চাপ থাকায় প্রযুক্তি খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটির ৮০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। শেয়ারদর কমায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। খাতটির ৬১ দশমিক ১১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এরপর ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। নয় দশমিক ৮১ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, বুধবার দিনভর সূচক ওঠানামার মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে ৩০১টি প্রতিষ্ঠানের ৭ কোটি ১৫ লাখ ৮৮ হাজার ১৬টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডের হাত বদল হয়েছে। তাতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫১২ কোটি ২১ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৭২ কোটি ২১ লাখ ৫১ হাজার টাকা।
এদিন ডিএসইতে ৮৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৬৩টি কোম্পানির শেয়ারদর। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৩টি কোম্পানির শেয়ারদর।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক দশমিক ৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৯ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল সোনালী পেপারের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রয়েল টিউলিপ সি পার্লের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল সোনালী আঁশের শেয়ার। এরপর ছিল জেমিনি সি ফুড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন বেগ, দেশবন্ধু, ফু-ওয়াং ফুড, স্কয়ার ফার্মা, এমারাল্ড ওয়েল এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার।
অন্যদিকে, দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ১৩ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৭৯ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৪১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ৪৪টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২টির।
দিনশেষে সিএসইতে ৪ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার ৭৪০ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮১ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।