Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 2:22 am

বিমা খাতের পতনে সূচক নিন্মমুখী

নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসইসি) সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শেষ হয়। বাজেট ঘোষণার পর প্রথম কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে দরপতন হলো। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল, সরকার পুঁজিবাজারের জন্য বিশেষ কিছু ছাড় দেবে।

রোববার লেনদেনে স্পস্ট বোঝা যায়, বাজেট নিয়ে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হয়নি। এক দিনেই দর হারিয়েছে তিন শতাধিক কোম্পানি। এর মধ্যে একটি বড় অংশের দর কমেছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা দুই শতাংশ পর্যন্ত বা এর আশপাশে। অনেক কোম্পানির দর সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত কমার পর ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে।

পুঁজিবাজারের পতনে বিমা কোম্পানিগুলো রেকর্ড গড়তে বেশ সিদ্ধহস্ত। বিক্রেতা সংকটে এ খাতের কোম্পানিগুলো যেমন একযোগে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায় হল্টেড হয়, আবার ক্রেতা সংকটে ফেলেও সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিন্ম কিনারায় দলবেঁধে হল্টেড হয়। গতকালও তেমনি সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিন্ম ধাপে একযোগে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার হল্টেড হয়েছে। ব্যতিক্রমী চিত্র দেখিয়েছে কেবল সদ্য তালিকাভ্ক্তু মেঘনা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। এটি আগের দিনের মতো একাকী বিপরীত পথে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ চুড়ায় হল্টেড থেকেছে।

দিনের শুরুতে হুড়মুড় করে সাধারণ বিমার প্রায় সব শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিন্ম ধাপে চলে যায়। এই সময়ে বিমা খাতের নেতিবাচক প্রবণতা গোটা বাজারকে নেগেটিভ ধারায় প্রবাহিত করে। লেনদেনের শেষ পর্যায়ে দুই-তিনটি কোম্পানি ক্রেতা সংকটের গøানি ঘুচাতে চাইলেও পারেনি। ক্রেতা সংকটের কাতারে শেষ পর্যন্ত আটকে ছিল। সাধারণ বিমার শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত। ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় বিমা খাতের শেয়ার ছিল ছয়টি। দরপতনের শীর্ষ ৩০ কোম্পানির তালিকায় এই খাতের শেয়ার ছিল ১৪টি।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিমা খাতে নতুন কোনো প্রকল্প বা প্রণোদনার কথা বলা হয়নি। চলমান প্রকল্পগুলোর নামই বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। এটিও বিমা খাতের শেয়ারদর পতন ধারায় নেমে আসার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন এ খাতের বিনিয়োগকারীরা।

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৮ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৪৩১ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ১০ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪০৩ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩৩৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে।

ডিএসইতে টাকার পরিমাণ লেনদেন হয়েছে ৬৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার, যা আগের কর্মদিবস থেকে ১২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা কম। আগের কর্মদিবস লেনদেন হয়েছিল ৭৫৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার। ডিএসইতে ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩টির বা ১৪ দশমিক ০২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ৩০৬টির বা ৮০ দশমিক ৯৫ শতাংশের এবং ১৯টির বা ৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত রয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১৩০ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮৯৫ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ৩০১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৫১টির, কমেছে ২২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির দর। সিএসইতে ২০ কোটি ০৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।