নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবারের লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন কমে ৭০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচক পতনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও কেনার চাপ বেশি ছিল আইটি খাতে। ফলে এ খাতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে। অন্যদিকে এদিন শেয়ার বিক্রির চাপ বেশি ছিল বিমা খাতে। ফলে আলোচ্য খাতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে। এতে গত কয়েক কার্যদিবস টানা উত্থানের পর দু’দিন ধরে পতন অব্যাহত ছিল খাতটিতে। যে কারণে গত কয়েক দিন দর বৃদ্ধির ফলে খাতটির শেয়ারগুলো যে মুনাফায় রয়েছে, তা সংগ্রহে এ পতন হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল আইটি খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ১১টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ১০টির দর বেড়েছে এবং ১টির দর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ার। খাতটিতে শেয়ারদর বেড়েছে ২ দশমিক ১০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল বিবিধ খাত। গতকাল সিরামিক, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, ওষুধ ও রসায়ন, ব্যাংক, সেবা ও আবাসন, বস্ত্র এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় বিমা খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। শেয়ারদর কমায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত। খাতটিতে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল ট্যানারি খাত।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪১ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, বাজারে লেনদেন হওয়া ৩০৯টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ৮৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৮৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০৯ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ২ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ৫ দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪৬ পয়েন্টে।
এদিন ৩০৯টি কোম্পানির ১৩ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৯৫৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ৭৩৫ কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৫৫ কোটি ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকার। অর্থাৎ লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল জেমিনি সি ফুডের শেয়ার। এরপরের তালিকায় ছিলÑমেট্রো স্পিনিং, রয়েল টিউলিপ সি পার্ল, স্কয়ার ফার্মা, সোনালী পেপার, মিরকাল ইন্ডাস্ট্রিজ, এমারাল্ড অয়েল এবং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ৭ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৬৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৬৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৮টির, কমেছে ৫৩টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টির দাম।
দিনশেষে সিএসইতে ২৪ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ৭৮৫ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৭ কোটি ৮৩ লাখ ৯৭ হাজার ৮৫ টাকার শেয়ার।