প্রতিনিধি, হিলি (দিনাজপুর): দিনাজপুরের বিরামপুরে ঢাকা থেকে রংপুরগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। গতকাল বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমার মহন্ত জানান, নিহত তিনজনের মধ্যে ড্রাইভার মাসুমের বাড়ি রংপুর বদরগঞ্জের বানিয়াপাড়ায় এবং যাত্রী হাফিজুল ইসলাম শাহের বাড় পার্বতীপুরের মধ্যপাড়ায়। বাকি একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
গেটকিপার সাইফুজ্জামান জানান, লেভেলক্রসিং গেটের সংস্কার কাজ চলছে, তাই ট্রেন আসার সময় রশি দিয়ে গেট বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাইভেটকারের চালক সেটি দেখতে না পাওয়ায় লাইনের ওপর গাড়ি তুলে দেয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহত হাফিজুর রহমানের বড় বাবা জানান, আজকে (গতকাল) জয়পুরহাটে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে বড়পুকুরিয়া খনির শ্রমিক হাফিজুর রহমান কয়েকজনকে নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে জয়পুরহাটের উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু বিরামপুর ঘোড়াঘাট লেভেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় ঢাকা থেকে ছুটে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন অতিক্রম করার সময় প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দিলে সেটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই হাফিজুরসহ তিনজনের মৃত্যু হয় এবং একজন আহত হন।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় বিরামপুর-ঘোড়াঘাট রেলগুমটি নামক স্থানে লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে একটি প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও একজন আহত হন। এ স্থানে বারবার ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য ত্রুটিপূর্ণ লেভেলক্রসিং ও গেটমেনকে দায়ী করছেন তারা।
এ বিষয়ে রেলওয়ে সহকারী পুলিশ সুপার তোবারক আলী সরকার জানান, স্থানীয় পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে দেখি ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রাইভেটকারটা দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে আছে এবং তিনটি মরদেহ পড়ে আছে। আমরা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছি। দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, আর একজনের এখনও পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বিরামপুর নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। এরকম দুর্ঘটনা কেন ঘটেছে, আমরা বিষয়টি দেখছি।
এদিকে তিনজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারলেও অপর একজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। নিহত হাফিজুর শাহ (৩৮) পার্বতীপুর উপজেলার খাগরাবন্দর এলাকার হালিমপুর শাহের ছেলে এবং অন্যজন রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ইসলামের ছেলে মাসুম বলে নিশ্চিত করে রেলওয়ে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিরা সবাই মধ্যেপাড়া পাথরখনির শ্রমিক।