Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 2:38 pm

বিরোধী দল নির্বাচন বয়কট করায় নতুন রণকৌশল নিতে হয়েছে: ওবায়দুল কাদের

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:‘আওয়ামী লীগকে নির্বাচন শেখাতে হবে না’ বলে মন্তব্য করে বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ দেশে ভালো নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেখ হাসিনা চালু করেছেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা নতুন দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল নির্বাচন বয়কট করায় নতুন রণকৌশল নিতে হয়েছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যাকে নিয়ে আপনারা (বিএনপি) আমাদের কত রং দেখালেন, কত জাদুই বা দেখাইলেন, সেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব (আওয়ামী লীগকে) অভিনন্দন জানিয়েছেন। এখন কাকে নিয়ে খেলবেন? কাকে নিয়ে আর এটা করবেন, ওটা করবেন? এখন স্বপ্ন দেখছেন, কখন বিশাল নিষেধাজ্ঞা, কখন ভিসানীতি প্রয়োগ হবে, কখন নিষেধাজ্ঞা আসবে। রোজ কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, ধৈর্য ধরুন।’

টিআইবির বক্তব্যের ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা কি পাতানো নির্বাচন ছিল? আপনার কী মনে হয়? পৃথিবীর নামিদামি গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের এ নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হয়েছে, এ কথা বলে প্রশংসা করে কেন? আমাদের আশেপাশে কেউ বাকি নেই। পাকিস্তানের হাইকমিশন পর্যন্ত আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে।’

কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি দল ছাড়া বহু দেশ নির্বাচিত সরকারকে নিয়ে প্রশংসা করছে। শুধু নির্বাচনে এলে হেরে যাবে, এই কারণে বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। এই নির্বাচনকে যারা বয়কট করেছে, তারা অনেক কথা বলেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন পাতানো ছিল না। নামিদামি দেশ পর্যবেক্ষণ করেছে। এমনকি নির্বাচনের পর বিভিন্ন দেশ অভিনন্দন জানিয়েছে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয়েছে। বিরোধী দল নির্বাচন বয়কট করায় নতুন রণকৌশল নিতে হয়েছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য বড় অংশ। জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে রণকৌশল নিতে হয়েছে, যার সোনালি ফসল ঘরে তুলেছি। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। দেশে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। সরকারি দলের একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ও কয়েকজনকে শোকজ করা হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা।’

বিএনপির আস্ফালন কোথায় গেলÑএমন প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে, জনগণকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। ভালো নির্বাচন হয়েছে, সে প্রশংসা আসছে। কেবল তারা নির্বাচনকে গ্রহণ করতে পারছে না। তারা এখন বলছে, সংসদ অবৈধ।’

কাদের আরও বলেন, ‘সংবিধানের নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকার যেদিন গঠিত হয়েছে, তার পেছনের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেÑসাংবিধানিক এ বিধানেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির মানুষ নেই। তাই নির্বাচনে এলে হেরে যাবে। চরম হতাশগ্রস্ত শিবিরে পরিণত হয়েছে বিএনপি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নিজেদের অফিসে তালা মেরে বলে, সরকার তাদের অফিসে তালা লাগিয়েছে। আবার তাদের অফিসের তালা তারাই ভেঙেছে। তারা অফিসে তালা লাগাতে পারে, আবার ভাঙতেও পারে।’

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সময় আছে পাঁচ বছর। পাঁচ বছরের মধ্যে আর উল্টোপাল্টা বলে কোনো লাভ নেই। অপেক্ষা করতে হবে। পাঁচ বছর পর আবার ১০ ডিসেম্বর, আবার ২৮ অক্টোবরের অপেক্ষা করুন। নির্বাচনের ট্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। পাঁচ বছর পর আবার চালু হবে। বিএনপিকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দীসহ অন্য নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।