বিরোধ নিরসনে বৈঠকে আসেনি পিএইচপি গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ডে রেলওয়ের একটি জমি নিয়ে দেশের বৃহৎ দুই শিল্প গ্রুপ পিএইচপি ও কেএসআরএমের মধ্যে গত কয়েক মাস যাবৎ উত্তেজনা দেখা দেয়। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি জমি দখলের অভিযোগ তোলা হয়। উভয়পক্ষই জায়গাটি তাদের বলে দাবি করছে। আর বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় দুই সংসদ সদস্য দায়িত্ব নেন। গতকাল চট্টগ্রাম চেম্বারে বিকাল ৩টায় আলোচনার জন্য দুই শিল্প গ্রুপকে বৈঠকে ডাকা হয়। কিন্তু এ বৈঠকে পিএইচপি গ্রুপের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
চট্টগ্রাম চেম্বার সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডে রেলওয়ের একটি জমি নিয়ে দেশের বৃহৎ দুই শিল্প গ্রুপ পিএইচপি ও কেএসআরএমের মধ্যে গত কয়েক মাস যাবৎ দৃশ্যমান উত্তোজনা দেয়। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি জমি দখলের অভিযোগ তোলা হয়। উভয়পক্ষই জায়গাটি তাদের বলে দাবি করছে। আর বিষয়টি সমাধানের জন্য চট্টগ্রামের বন্দর-হালিশহর আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ এবং রাউজান আসনের ফজলে করিম চৌধুরী দায়িত্ব নেন।
গতকাল চট্টগ্রাম চেম্বারের বিকাল ৩টায় পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুসারে আলোচনার জন্য দুই শিল্প গ্রুপকে বৈঠকে ডাকা হয়। কিন্তু এ বৈঠকে পিএইচপি গ্রুপের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। তবে দুই সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে কেএসআরএমের মালিকপক্ষসহ অন্যান্য লোকজন উপস্থিত হয়ে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেন। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় রেলওয়ে উভয় শিল্প গ্রুপের প্রতিনিধিদের নিয়ে তাদের কাছে লিজকৃত সঠিক জমিটি বুঝিয়ে দেবেন।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা বন্দর-হালিশহর আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ শেয়ার বিজকে বলেন, রেলওয়ে উভয় শিল্প গ্রুপের কাছে জমি লিজ দিয়েছে। কিন্তু কোনটি কার কাছে দিয়েছে তা স্পষ্ট করেনি। ফলে এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়। আর বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা রেলওয়েকে বলেছি।
তিনি আরও বলেন, এ বৈঠকে পিএইচপি গ্রুপের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। গ্রুপটির পক্ষ থেকে সকালে একটি চিঠির মাধ্যমে বৈঠকে উপস্থিত না থাকার বিষয়টি জানায়। তবে তারা এটি ভালো করেনি। আমরা আমাদের বৈঠক করেছি। সিদ্ধান্ত হয়েছে রেলওয়ে উভয় শিল্প গ্রুপকে লিজকৃত জমি বুঝিয়ে দিবে।
গত কয়েক মাস ধরে সীতাকুণ্ডে আনোয়ারা জুট মিলস্ এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী শাহজাহানের মালিকানাধীন কেএসআরএম ও নড়ালিয়া এলাকায় অবস্থিত আরেক চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সুফি মিজানের মালিকানাধীন পিএইচপি গ্লাস ফ্যাক্টরির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে।
এ বিরোধপূর্ণ জায়গাটি নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার উভয় শিল্পগ্রুপের মাঝে চরম উত্তোজনা দেখা দেয়। এ বিরোধের জের ধরে দুই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আনসার সদস্যদের মধ্যে গত ২৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) গোলাগুলি ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সংক্রান্ত একাধিক সংবাদ আমাদের শেয়ার বিজের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
কেএসআরএম গ্রুপের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে বাড়বকুণ্ডের রেলওয়ের ১.৬৪ একর জমি লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয় স্থানীয় নুরুল আলম। সে থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভূমি লাইসেন্স ও ভ্যাট পরিশোধ করে ভোগদখল করে আসছিলেন তিনি, যা গত ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে নুরুল আলম কৃষিকাজে অপারগতা প্রকাশ করলে কেএসআরএমের পরিচালক সেলিম উদ্দিন রেলওয়ের কাছে জমিটি লিজ নেওয়া জন্য আবেদন করেন। পরে ত্রিপক্ষীয় শুনানির মাধ্যমে পক্ষে পরিচালক সেলিম উদ্দিনের নামে লাইসেন্স প্রদান করেন, যা হালনাগাদ লাইসেন্স ফি ও ভ্যাট প্রদানের মাধ্যমে সেলিম উদ্দিন ভোগ-দখলে আছে।
এ প্রসঙ্গে পিএইচপি গ্রুপের কারও বক্তব্য অনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া যায়নি। তবে সাম্প্রতিক আলাপে পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের কারখানার পেছনেই ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন। রেললাইন পর আমাদের বাগান আছে। আর এ বাগানে যাওয়ার জন্য ২০০৫ সালেই রেলওয়ের একটি জায়গা ইজারা নেয় পিএইচপি। কিন্তু ওই জায়গার পাশে রেলওয়ে থেকে জমি ইজারা নেওয়ার দাবি করে বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) পুরো জায়গা ঘিরে ফেলে কেএসআরএম, এমনকি রেলওয়ে থেকে ইজারা নেওয়া পিএইচপির জায়গাটিও। তারা পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস কারখানার পেছন থেকে বাগানে যাওয়ার পথটিও বন্ধ করে দেয়। অথচ এ ছোট একটি জায়গা নিয়ে তাদের কি আগ্রহ তা বুঝলাম না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০