বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া কোটা আর প্রয়োজন নেই: ছাত্রদল

নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে তাতে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বিএনপির ছাত্র সংগঠনটি বলছে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অতি সীমিত সংখ্যক কোটা ছাড়া বাংলাদেশে এই মুহূর্তে আর কোনো কোটার প্রয়োজন নেই।

রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে যে কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলনে আমরা নৈতিক সমর্থন দিয়েছি এবং সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। এখন যে আন্দোলন হচ্ছে, সেই আন্দোলনেও আমরা সমর্থন দিচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে কোটা সংস্কারের বিষয়ে আন্দোলন করছে, সেটির বিষয়ে একটা চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমাদের যে বক্তব্য সেটি হচ্ছে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অতি সীমিত সংখ্যক কোটা ছাড়া বাংলাদেশে এই মুহূর্তে আর কোনো কোটার কোনো প্রয়োজন নেই। এটি আমাদের অফিসিয়াল বক্তব্য। চলমান যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীরা করছে এই আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রদল পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছে এবং একই সঙ্গে আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের রুখে দিয়ে এই আন্দোলন সফল হবে ইনশাল্লাহ।’

কোটা পুরোপুরি বাতিল না করে সংস্কারের দাবি জানিয়ে নাছির বলেন, ‘আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই,
২০১৮ সালে যে আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলনটি ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন। কিন্তু অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে সেটিকে কোটা সংস্কার না করে কোটা বাতিল করে দিয়েছে একটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বলে।’ ‘তখন যারা আন্দোলন করেছে, তারা কিন্তু কেউ কোটা বাতিল চায়নিƒ সবাই চেয়েছে কোটা সংস্কার। এজন্যই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী এটা (কোটা বাতিল) করেছেন।’
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনে যারা রয়েছেন, তাদের আমরা সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে বলতে চাই, এই গুম-খুনের সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে এই অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার, তার বিরুদ্ধে আপনাদের সোচ্চার হতে হবে এবং ভারতের যে অবৈধ হস্তক্ষেপসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের সোচ্চার হোন।’

ঢাকা কলেজের যেসব নেতা কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের বলি, আপনাদের কলেজের সহপাঠী আতিকুর রহমান রাসেলকে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১ জুলাই আজিমপুর এলাকা থেকে ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখার সহসভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারী কয়েকজন। এরপর থেকে তার আর কোনো হদিস নেই। রাসেলের ‘গুম’ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘রাসেলের নামে কোনো মামলা নেই, কোনো ওয়ারেন্ট নেই। বিনা কারণে তাকে গুম করা হয়েছে। বারবার আমাদের ভাইদের গুম করা হয়েছেƒআজ অবধি আমরা তাদের পাইনি। আমরা বলতে চাই, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে আমরা শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। এখন যদি আমাদের ভাইদের এভাবে গুম করা হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ছাত্রদল ভীত নয়, ছাত্রদলের একজন নেতাকর্মীও ভীত নয়ƒ রাসেলের সন্ধানে ছাত্রদল রাজপথে থাকবে, আমরা আমাদের ভাইদের অবশ্যই প্রতিশোধ নেব।’

বকুল বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করতে চাই, অনতিবিলম্বে রাসেলকে আমাদের মাঝে যদি ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে আগামী ২-১ দিনের মধ্যেই ঢাকাসহ সারাদেশে এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করব এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না রাসেলকে ফিরিয়ে দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই সরকারের বিরুদ্ধে কঠিন থেকে কঠিনতর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবƒ এই বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি শাহীনুর রহমান শাহীন, সাধারণ সম্পাদক জুলহাস মিয়া প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০